নিজস্ব প্রতিনিধি, নাইক্ষ্যংছড়ি »
সীমান্তের জিরো লাইনের আকাশ পথে ড্রোন উড্ডয়ন, মাইন স্থাপনসহ বিভিন্ন সংঘাতমূলক কার্যক্রম বন্ধ করে শান্তি বজায় রাখতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)র প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত পিলার ৩১/১-এস এর সন্নিকটে, মায়ানমারের অভ্যন্তরে তুমব্রুর লেফট্ ক্যাম্পের সামনে বিজিবি-বিজিপি অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণ, গোলার্বষণ এবং মায়ানমারের হেলিকপ্টার উড্ডয়নে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ সীমান্তের মানুষ। এ নিয়ে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)র পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বিজিবি ।
উক্ত পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার ৩৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) এর লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ, পরিচালক (অপারেশন), কক্সবাজার রিজিয়ন লে. কর্নেল এসএম তৌহিদুল আলম, কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন, মেজর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং ক্যাপ্টেন এস এম সাকিবুর রহমানসহ ১৯ জন।
অন্যদিকে মাায়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল কে আও নাইইং সো, বিজিপি কোম্পানি কমান্ডার মেজর লে মাইনতসহ ২০ জন।
পতাকা বৈঠকে ২০১৯ সাল হইতে বিজিবি-বিজিপি পর্যায়ে যৌথ টহল বন্ধ থাকার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিজিবির পক্ষ হতে সীমিত পরিসরে আপতত পালংখালী বিওপি হতে তুমব্রু বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্তে যৌথ টহল পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়। মায়ানমার বিজিপি হতে এ ব্যাপারে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত টহলে অংশগ্রহণ হবে বলে জানানো হয়।
বিজিবির পক্ষ হতে মায়ানমার কর্তৃক নির্মিত কাঁটাতারের বেড়ার কিছু ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের তথ্য প্রদান করা হলে উক্ত ক্ষতিগ্রস্ত বেড়া উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে পর্যায়ক্রমে মেরামত করা হবে বলে বিজিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সীমান্ত এলাকায় ড্রেন উড্ডয়নের বিষয়ে বিজিপি জানায়, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী-দুষ্কৃতকারী ড্রোন উড্ডয়ন করে থাকে। তারা আরো জানায়, যদি কোন ড্রোন মায়ানমার হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, তাহলে বিজিবি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সম্প্রতি তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্য লাইন এলাকায় অগ্নি সংযোগের পর এফডিএমএনদের কিছু কিছু স্থাপনা রয়ে গেছে যা ভবিষ্যতে সন্ত্রাসীরা আস্তানা তৈরি করতে পারে। তাই উক্ত স্থানের ৩টি স্থাপনা ভেঙে ফেলার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। বিজিপি জানায়, বিষয়টি তাদের উর্ধ্বতন দপ্তরকে অবগত করবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।
দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাসহ ভবিষতে সীমান্ত এলাকায় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার বিষয়ে উভয় অধিনায়ক একমত পোষণ করেন।