সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার গাড়ি থামিয়ে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর করে তাদের ‘গুলি করার’ হুমকিও দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা হলেন– চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বদরুল আরেফিন।
ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান খান জানান, আমরা অফিসে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ তিনজন এসে আমাদের গাড়ি থামায়। থামানোর সঙ্গে সঙ্গেই কাচ ভাঙচুর শুরু হয়। একজন আরেকজনকে বলতে থাকে– গুলি কর, গুলি কর। আমরা কোনোভাবে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে একটি গলির ভেতর ঢুকে প্রাণে বাঁচি।
তিনি বলেন, ‘গুলির শব্দ আমরা শুনিনি। তখন আমরা শুধু দৌড়াচ্ছিলাম। গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, তবে আমরা কেউ গুরুতর আহত হইনি। কারা বা কেন হামলা করেছে, তা তখন বুঝতে পারিনি। হামলাকারী তিনজন মোটরসাইকেলে করে আসে। একজনের হাতে ছিল চাপাতি। তিনি গাড়িতে প্রথম কোপ দেন। এরপর অন্যজন গুলি করার নির্দেশ দেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, কাস্টমসের অনিয়ম চিহ্নিত করে তারা প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি মামলা করেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নানা পক্ষের হুমকি পাচ্ছেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ বন্ধ করার জন্য পূর্বেও চাপ দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ বলেন, সম্প্রতি দুই কনটেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ এবং আরেক কনটেইনারে ঘন চিনি শনাক্ত করেন এই কর্মকর্তারা। আবার কসমেটিকস আমদানিকে কেন্দ্র করে কাস্টমসে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেটের মিথ্যা ঘোষণার অনিয়মও তারা ধরেছেন। গত দুই মাসে সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এসবের কারণেই তারা বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে একজন ফোন করে নিজেকে সাজ্জাদ পরিচয় দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ধারণা করছি, অনিয়ম ধরার কারণেই আজকের এই হামলা।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার খায়রুল বাসার বলেন, ঘটনার পর ডবলমুরিং থানার ওসিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হবে। কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান আমাদের জানিয়েছেন, অফিসে যাওয়ার পথে হঠাৎ তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী তাদের গাড়ি আটকে দিয়ে কাচ ভাঙচুর করে। এ সময় একজন অন্যজনকে বারবার ‘গুলি কর’ বলছিল। কোনো ধরনের গুলির ঘটনা ঘটেনি। হামলাকারীদের আচরণ ছিল অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। কারা, কী কারণে এ হামলা চালিয়েছে– জানাতে পারেনি তিনি। থানায় আসতে বলা হয়েছে, আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার ঘটনায় বন্দর থানায় জিডি করেছিলেন আসাদুজ্জামান খান। জিডিতে উল্লেখ ছিল, ৫ অক্টোবর বিকেলে এক ব্যক্তি ফোন করে তাকে হত্যার হুমকি দেন।

















































