‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথায় মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোন কিছুরই দরকার নেই, সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারে। আসলে নিজেরা তো কোন আইন আদালত মানেন না, সে কারণেই তারা এ ধরনের লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলতে পারেন।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সীতাকু-ে শঙ্করমঠ ও মিশনের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার পঞ্চমদিনের যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সরকার চাইলে বিএনপি নেত্রীকে বিদেশ নিতে পারবেন বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা দেশে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে এরা স্বাধীনতার শত্রু, এদের পূর্ব পুরুষ আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, এরা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এরা এখনো পাকিস্তানি ভাবধারা মনে ধারণ করে, এরা দেশের শত্রু, এদের চিহ্নিত করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই।
শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সীতাকু- উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শ্রীমৎ পরমানন্দ মহারাজ। বক্তব্য রাখেন বিমল কান্তি দাশ, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, দুলাল দে প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার একটি অসুখ হলেই বিদেশ কেন নিয়ে যেতে হবে এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, দেশে লাখ লাখ হাজার কোটি মানুষের চিকিৎসা হয়, দেশে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক ভালো প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আছে, যেখানে অনেক ভাল চিকিৎসা হয় এবং অন্যদেশ থেকেও এখানে অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে আসে। বেগম খালেদা জিয়ার পেটে-হাঁটুতে বা অন্যকোন সমস্যা হলেই বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা জিকির তোলেন কেন সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, আইনানুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এভাবে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ধোঁয়া তোলার মাধ্যমে তারা চিকিৎসক এবং হাসপাতালগুলোকে অবজ্ঞা করছেন। বিশেষ করে চিকিৎসকদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। আর মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে মনে হচ্ছে আইন আদালত কোন কিছু দরকার নাই, সরকারকে হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট সবকিছুর ভূমিকা পালন করতে হবে। যা কখনো সম্ভব নয়।
এর আগে যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চান তারা শুধু সমাজের শত্রু নয় রাষ্ট্রের শত্রু। কারণ এই রাষ্ট্র রচিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। ধর্ম যার যার এই রাষ্ট্র সবার, আমাদের দেশে যখন ঈদ উৎসব হয় সেই উৎসবের আনন্দ শুধুমাত্র মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ঈদ উৎসবে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষও যান। একইভাবে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানরা আনন্দ উৎসবে শামিল হন। এটিই আমাদের সংস্কৃতি। এই চেতনায় আবহমান বাঙালি, বাংলা এবং বাংলাদেশ ধারণ করে। তাই ছোটখাট বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাদের এই সম্প্রীতির বন্ধনে কখনো বিভেদ তৈরি করতে পারেনি এবং পারবে না। বিজ্ঞপ্তি