চট্টগ্রাম নগরে ইতিমধ্যে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। আর এতেই নগরের বিভিন্ন স্থানে জলজটের সৃষ্টি হয়েছে দেখে আবারও অলোচনায় উঠে এসেছে চট্টগ্রাম নগরের স্থায়ী সমস্যা জলাবদ্ধতা। আসন্ন বর্ষায় আবারও দুর্ভোগের আশঙ্কায় আছেন নগরবাসী।
খাল সম্পসারণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় সাময়িক বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম নগরের চান্দগাঁও থানা মোড়, বাদুরতলা, রহমতগঞ্জ, শরিফ বলোনি এলাকা। জোয়ারের সময় এসব এলাকায় পানি প্রবাহ আটকে যাচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, কোনো কোনো এলাকায় এ সমস্যা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলছে। শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের পর এসব এলাকায় পানি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ছিল।বহদ্দারহাট, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে ছিল।
নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটির আওতায় নগরের জামালখান খালে সংস্কার কাজ চলছে।
নগরের নূর আহমদ সড়কের বিমান অফিস এলাকা থেকে উৎপত্তি খালটি মিলিত হয়েছে নগরের চাক্তাইখালে। সংস্কার কাজের খালটিতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। খালের বিভিন্ন অংশে সম্প্রসারণ ও প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এতে বৃষ্টির পানি উপচে পড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটির পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার কাজের জন্য জামালখান খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। খালের পানি একটি পাইপ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ায় পানি জমেছে।
দুই হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চউক। ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। চউকের ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পটির পূর্ত কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পানি জমে থাকার আরেক কারণ নগরের খাল-নালাগুলোতে আবর্জনা জমে থাকা। ইতিমধ্যে ১০৯টি নালার তালিকা করে তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। জলাবদ্ধতার ‘হটস্পট গুলো চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছ। অনাদিকে এরই মধ্যে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত খালের জলকপাটের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সিডিএ।
দীর্ঘদিনেও এই প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় নগরবাসী ত্যক্তবিরক্ত। জলাবদ্ধতার বিড়ম্বনা আর কত কাল সইতে হবে এটাই এখন বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এ মুহূর্তের সংবাদ