নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতকানিয়া :
একদিকে হালকা রোদ অপরদিকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তারই মধ্যে আউশ ধান কাটা নিয়ে সাতকানিয়ায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাতকানিয়ায় অন্য বছরের চেয়ে এ বছর একটু আগেই আউশ ধান কাটা কাজ শুরু হয়েছে।
আউশ ধান এ ভরা মৌসুমেও মাঠে দেখা মেলেনি কামলার। এ কারণে কৃষক-কৃষাণীদের নিজেদেরই পড়েছে পাকা ধান কাটার ভার। বিগত আউশ মৌসুমের ক্ষয়ক্ষতি চলতি বছর পুষিয়ে উঠবে এ আশায় তারা আটঘাট বেঁধে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। আউশ রোপণে আগাছা পরিষ্কার, সার, কীটনাশক ইত্যাদি মিলিয়ে উৎপাদন খরচ কৃষকের সামর্থ্যরে মধ্যে ছিল। আউশ ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত ক্ষেতে প্রাকৃতিক পানিই পর্যাপ্ত ছিল। সেচের পানির প্রয়োজন হয়নি বিধায় খরচ অনেকটা কমে গেছে।
সাতকানিয়া ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১শ’ ৫৫ হেক্টর। তন্মধ্যে হ্ইাব্রিড-৩শ’ হেক্টর, রোপণ-৪শ’ ৩০ হেক্টর ও উপসী-৭শ’ ২৫ হেক্টর।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সাতকানিয়ার ১টি পৌরসভা ও ১৭ ইউনিয়নের ধানি ক্ষেতে আউশ পাকা ধানে সোনালি রং ধারণ করেছে। দল বেঁধে কৃষকরা আউশ ধান কাটছেন। কৃষকদের সংগে কথা বলে জানা যায়, এ বছর জমিতে তারা বিআর-১৪, বিআর-২৬, ব্রি-২৮, ব্রি-৪৮, ব্রি-৫৫, হাইব্রিড এ্যারাইজ তেজ, ধানী গোল্ড জাতের ধান বপণ করেছেন। অনেক কৃষক উপজেলার মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সারিবদ্ধভাবে ধানের চারা লাগিয়েছেন। যার কারণে কৃষকরা চাহিদা মত ফলনও পেয়েছেন।
উপজেলার সোনাকানিয়া গারাংগিয়া এলাকার কৃষক জিয়াবুল হক, হাতিয়ার কুলের কৃষক মোহাম্মদ ইউনুচ, জমাদার পাড়ার সাহাবুদ্দিন ও আবুল হাশেম জানান, এখনও অর্ধেক ক্ষেতের আউশ ধান কেটেছি। মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টি ছিল সে কারণে এবছর আউশ ধানের ফলনও বেশি হয়েছে।
কৃষক মোহাম্মদ ইউনুচ জানান, এ বছর আউশের প্রচুর ফলন হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে আউশ কাটার এ ভরা মৌসুমে কামলা না পাওয়ায় নিজেদের ধান নিজেরা কাটছি।
সাতকানিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, চলতি বছর সরকারি আউশ প্রণোদনা পাওয়ার কারণে কৃষকদের মাঝে আউশ চাষে আগ্রহ ছিল বেশি। ক্ষেতে রোগ-বালাই একেবারেই কম হওয়ায় আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার আউশ চাষীরা পুরোদমে আউশ ধান কাটতে শুরু করেছেন। যে সমস্ত কৃষক উপজেলার মাঠ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে আউশ ধান রোপণ করছেন তাদের ফলন আশা করি চাহিদার চেয়ে আরও কয়েকগুণ বেশি ফলন হয়েছে। তিনি আরো জানান, আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিনে সক্ষম হয়েছি।