নিজস্ব প্রতিবেদক »
পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট রিং রোডের মাঝে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। নগরে প্রবেশ কিংবা বহির্গমনের জন্য এ ফ্লাইওভারটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
সমুদ্র উপকূলের খেজুরতলা এলাকা থেকে সাগরিকা জহুর আহম্মদ স্টেডিয়ামের মূল গেট পর্যন্ত ফ্লাইওভারটি আগামীর বন্দর খ্যাত বে-টার্মিনালের যোগাযোগকে সহজ করবে। বর্তমানে ফ্লাইওভারটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগস্ট মাসে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত হবে। এটা উদ্বোধন হতে পারে সেপ্টেম্বরে।
ফ্লাইওভারের উপরে সরেজমিনে দেখা যায়, খেজুরতলার গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে ফ্লাইওভারটি শেষ হয়েছে স্টেডিয়ামের মূল গেটের দক্ষিণ পাশ বরাবর। প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ ফ্লাইওভারটি ৫৪ ফুট প্রস্থে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে চার লেন করার ব্যবস্থা রেখেছে দায়িত্বশীল সংস্থা। খেজুরতলা থেকে স্টেডিয়াম গেট পর্যন্ত কাজ শেষ হলেও বাকি রয়েছে সাগরিকার মূল সড়কে সংযুক্ত হবার ঢালাইয়ের কাছ। আনুমানিক ১৫০ ফুটের এ ঢালাইয়ের মধ্যে তৈরি করা হচ্ছে রোড ডিভাইডার। এ কাজ শেষ হলে পুরো ফ্লাইওভারটি কার্পেটিং করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। এছাড়া রাস্তা আলোকায়নে ল্যাম্পপোস্টও বসানো হয়েছে।
ফ্লাইওভারের নিচের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্টেডিয়াম গেটের পাশে যে ড্রেনটি ছিলো তার গতিপথ পরিবর্তন না করে ড্রেনটির উপরে ফ্লাইওভারটি তুলে নেওয়া হয়েছে। এজন্য নিচে বসানো হয়েছে বাড়তি অনেকগুলো পিলার ও বীম। ড্রেনটিও করা হয়েছে বেশ বড়, যেন নগরের পানি প্রবাহে কোনো বেগ না পায়। কিছুদূর যেতেই দেখা যায়, ড্রেনগুলো গিয়ে পড়েছে একটি খালে। খালের পাড়ে ফ্লাইওভার বরাবর যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও দক্ষিণের কিছুটা দূরে রয়েছে এলাকাবাসী যাতায়াতের একটি ছোট সেতু। খালের পশ্চিম অংশে ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাটি এলাকাবাসী বেড়া দিয়ে রেখেছে সেখানে আগামীতে ঈদের জামাত বা কারো মৃত্যু পরবর্তী জানাজা পড়ার জন্য। এরপর কিছুদূর যেতেই রেললাইন।
রেললাইনের অংশে কিছুটা বেঁকে গেছে ফ্লাইওভারটি। সেখানটায় ফ্লাইওভারটির উচ্চতা প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ ফুট। এরপর মাটির পথ চলে গেছে খেজুরতলায়, ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে।
স্থানীয়রা এ ফ্লাইওভারটি হওয়ায় বেশ আনন্দিত। আবু ইসহাক নামের এক ব্যক্তি বলেন, ফ্লাইওভার হওয়ায় এই জায়গাগুলোর দাম অনেক বেড়ে গেছে। আগে এ জায়গা অনেকটা অবহেলিত ছিলো। এখন জায়গার দাম বেড়েছে। যাদের জায়গা আছে, তারাও বাড়ি করছে। এলাকার চিত্র বদলে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ফ্লাইওভারটির নিচে রাস্তা করার আশাবাদও রাখেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে বশর নামের এক রিক্শাওয়ালা বলেন, ‘ফ্লাইওভারের উপরে তো সব গাড়ি যাবে না। তাছাড়া যাদের ঘরবাড়ি ফ্লাইওভারের নিচের এলাকায় তাদের চলাচলের জন্যও ফ্লাইওভারটির নিচে একটি রাস্তা করলে ভালো হতো।’
ফ্লাইওভার প্রসঙ্গে কথা হলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘ফ্লাইওভারটি পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট রিং রোড প্রকল্পের একটি অংশ। আমরা ফ্লাইওভারটির কাজ প্রায় শেষ করেছি। ফ্লাইওভারটি বা ওদিকের কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় এতোদিন শহরের গাড়িগুলো রিং রোডে উঠতে বা রিং রোড থেকে শহরে বের হতে উত্তর কাট্টলী (ঈশান মহাজন সড়ক) দিয়ে চলাচল করতো। ফ্লাইওভারটি চালু হলে ওদিকের লোকাল রোডের চাপ আর থাকবে না।’
যান চলাচলের উপযোগিতায় ফ্লাইওভারটির আর কত সময়ের প্রয়োজন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভারটির কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু মূল সড়কের সঙ্গে সংযোগের কিছু অংশে ঢালাইয়ের কাজ বাকি আছে। এরপর কার্পেটিংয়ের কাজ করতে হবে। সবগুলো কাজ মিলিয়ে আগস্ট মাসেই ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত হবে। তবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি সেপ্টেম্বরে ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করার।