সাকিবের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না বিসিবি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।  আগামী অক্টোবরে এই সিরিজে সাকিবের খেলা নির্ভর করছে তার নিরাপত্তার ওপর। রাজনৈতিক কারণে সাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।  এছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাকিব নিশ্চুপ থাকায় ভক্তদের একটা অংশ তার ওপর ক্ষিপ্ত।  এমতাবস্থায় সাকিব নিরাপত্তা চেয়েছেন।  যদি সাকিব খেলা শেষে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা পান, তবেই খেলবেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজ; তা না হলে কানপুর টেস্টই তার শেষ টেস্ট হতে পারে।  এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জানাল, সাকিবের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়।

আদাবর থানায় করা গার্মেন্টসকর্মীর প্রাণহানীর মোকদ্দমায় সাকিব আসামী।  এখনও অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও তার নাম থাকা সাপেক্ষে দেশে আসলে হতে পারেন গ্রেফতার।  দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলতে তিনি যদি দেশে ফেরেন, তাহলে সিরিজ শেষে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে আছে সংশয়।

সন্ধ্যায় মিরপুরে বোর্ড সভা শেষে ফারুক আহমেদ জানালেন, ‘গতকাল দুই দফায় কথা হয়েছে সাকিবের সাথে।  আমি তো আসলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ না।  সেটার পার্ট হতে পারব না। একজনকে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার সামর্থ্য নাই।  সেটা আসলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকে এবং তার দিক থেকে আসতে হবে।  বোর্ড থেকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার সামর্থ্য বিসিবির নাই।’

সাকিবের নিরাপত্তার ব্যাপারটি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে হবে বলেই মনে করেন ফারুক, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে হবে। বিসিবি কোনো এজেন্সি না, পুলিশ না, র‍্যাব না।  সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার ব্যাপারটি আসতে হবে।’

বিসিবি সভাপতি অবশ্য খুব করেই চান সাকিব তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটি দেশের মাটিতে খেলুন, ‘সাকিব যদি এখান থেকে শেষ টেস্ট খেলতে পারে, ওর মতো আমিও বিশ্বাস করি এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না।’

সব মিলিয়ে সাকিব যে দুঃসময় পার করছেন, তা অনুধাবন করেই ফারুক আহমেদ সাকিবকে অবসরের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার কথা বলেননি।  তিনি জানান, ‘সাকিব তার জীবনের কঠিন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সব দিক থেকেই।  আমার আসলে খুব বেশি কিছু বলার ছিল না।  সে যে কারণ দেখিয়েছে, বোঝানোর চেষ্টা করিনি।  একটা খেলোয়াড় যখন বুঝতে পারে তার সময়… সে মনে করেছে শর্টার ভার্শনে নতুন কারও জায়গা নেওয়ার সঠিক সময়।  টেস্টেও সে খেলতে চেয়েছিল, ঢাকা থেকে অবসর নিতে চায়।  এটাকে সম্মান জানিয়েছি।’

বিসিবি সভাপতি মনে করেন, বাংলাদেশ এখন ‘নিরাপদ’ হলেও বিতর্কিত সরকারের অংশ হিসেবে সাকিবের জন্য তা হয়ত ‘অনিরাপদ’।  ফারুক আহমেদের ব্যাখ্যা, ‘বাংলাদেশ অনিরাপদ না।  আমি তো এখানেই থাকি।  কার জন্য নিরাপদ কার জন্য অনিরাপদ এটা একটু আপেক্ষিক ব্যাপার আরকি।  সাকিব আর আমরা হয়ত সেইম লাইনে নাই।  আমরা ভালোই আছি।  ব্যক্তিগত ব্যাপারও বলব না।  সে রাজনীতিবিদ, সবাই জানে।  তার বিরুদ্ধে কেইস হয়েছে।  সব ব্যাপার মিলিয়ে সে নিরাপদ না।’