সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
একপ্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া দেখছিলেন, তবে নিজে ঠাণ্ডা মাথায় বল বুঝে ব্যাট করে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। রান তোলায় গতি না থাকলেও অন্তত উইকেট বাঁচিয়ে লড়ে যাচ্ছিলেন। সাকিবের সেই লড়াই থেমেছে ৩৬ রানে।
জশ হ্যাজেলউডের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন সাকিব। স্টাম্প ছেড়ে খেলতে চেয়েছিলেন, তবে বল ব্যাটে ঠিকমতো লাগেনি। ৩৩ বলের ইনিংসটি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাজান ৩ বাউন্ডারিতে।
সাকিবের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে ভূমিকা রাখা শামীম হোসেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নিজেকে চেনানো যুব বিশ্বকাপজয়ী তরুণ পারলেন না অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। মিচেল স্টার্কের বিষাক্ত ইয়র্কারে ৩ বলে ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন শামীম।
তার বিদায়ের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৯ ওভারে ৬ উইকেটে ১২০ রান।
ছক্কা মেরেই আউট মাহমুদউল্লাহ
টপ অর্ডারে ব্যাট করতে হচ্ছে মাহমুদউল্লাহকে। কারণ তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতি। যদিও বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সুবিধা করতে পারলেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২০ রানে আউট হয়েছেন তিনি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম ম্যাচে চার নম্বরে নেমেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। মন্থর শুরুর পর একটু যখন আগ্রাসী ভাব ফুটে উঠছিল তার, ঠিক সেই সময়ই জশ হ্যাজেলউডের শিকার হয়ে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। আগের বলে ছক্কা হাঁকালেন অস্ট্রেলিয়ান পেসারকে, পরের বলেই আউট বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তার আউটে হ্যাজেলউডের অবদান যতটা, তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব মোয়েসেস হেনরিকসের। এই ফিল্ডার অনেকটা দৌড়ে গিয়ে পেছন দিক থেকে বল তালুবন্দি করেন। মাহমুদউল্লাহ তার ২০ বলের ইনিংসটি সাজান এক ছক্কায়।
তার বিদায়ের পর নুরুল হাসান সোহান নিজের উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। অ্যান্ডু টাইয়ের অনেকটা বাইরের বল, নিশ্চিতভাবে ওয়াইড হতো, সেই বল ব্যাটে লাগিয়ে মিচেল মার্শের হাতে ধরা পড়েন সোহান। আউট হওয়ার আগে ৪ বলে করেন ৩ রান।
তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৪.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৮৬ রান।
ভুল শটে ‘আত্মঘাতী’ নাঈম
সৌম্য সরকার উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। তার ওপেনিং পার্টনার নাঈম শেখেরও একই অবস্থা। ভুল শট খেলে ‘আত্মঘাতী’ হলেন এই ওপেনার। অপ্রয়োজনীয় রিভার্স সুইপে দলের চাপ আরও বাড়িয়ে এসেছেন নাঈম।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের বোলিং আক্রমণ সামলানো এমনিতেই কঠিন। সেখানে উইকেট ছেড়ে আসা বাংলাদেশকে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে। সৌম্যর পর নাঈমও নিজের ভুলে আউট হয়েছেন। বাঁহাতি এই ওপেনার অ্যাডাম জাম্পার বলে বোল্ড হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনারের লাইনে থাকা বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি। বল সরাসরি আঘাত করে স্টাম্পে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে নাঈম ২৯ বলে ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় করেছেন ৩০ রান। তার বিদায়ের পর স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৫৮ রান।
উইকেট বিলিয়ে এলেন সৌম্য
একটা উইকেটের মূল্য অনেক বেশি। সেখানে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া হওয়ায় ব্যাটসম্যানের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অথচ সৌম্য সরকার নিজের উইকেট কিনা বিলিয়ে এলেন! জায়গা থেকে অনেকটা সরে গিয়ে বল টেনে লাগালেন স্টাম্পে। বাংলাদেশ হারালো প্রথম উইকেট।
জিম্বাবুয়ে সিরিজে অসাধারণ সময় কাটিয়েছেন সৌম্য। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে আউট হয়ে গেছেন এই ওপেনার। জশ হ্যাজেলউডের বলটি নিশ্চিতভাবে ওয়াইড হতো। কিন্তু সৌম্য জায়গা থেকে অনেকটা পিছিয়ে গিয়ে অফ সাইডে কাট করতে চাইলেন। বল ব্যাটে লাগলো ঠিকই, তবে ব্যাপারটা এমন হলো দাঁড়ালো যে- সৌম্য নিজেই ‘ইচ্ছাকরে’ বল নিয়ে লাগালেন স্টাম্পে।
হ্যাজেলউডের বলে বোল্ড হয়ে মাত্র ২ রানে থামলেন সৌম্য। ৯ বলের ইনিংসে স্বাভাবিকভাবেই নেই কোনও বাউন্ডারি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাঁহাতি ওপেনারের বিদায়ের পর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ ওভারে ১ উইকেটে ২৬ রান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
এবারই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি বাংলাদেশ। আজ (মঙ্গলবার) প্রথম ম্যাচ দিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ মাঠে গড়াচ্ছে। প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দুই বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে আছেন শরিফুল ইসলাম। তবে সৌম্য সরকার পার্টটাইম কাজ চালাতে পারবেন। এছাড়া সাকিব আল হাসান ছাড়াও পাঁচজন স্পিনিং অলরাউন্ডার রয়েছেন। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে আছেন নাসুম আহমেদ।
বাংলাদেশ একাদশ: নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ: জশ ফিলিপে, অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল মার্শ, মোয়েসস হেনরিকস, অ্যাশটন টার্নার, ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), অ্যাশটন অ্যাগার, মিচেল স্টার্ক, অ্যান্ড্রু টাই, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজেলউড।