ডেস্ক রিপোর্ট »
সরকারি চাকুরিতে প্রবেশে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কোটা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। সব গ্রেডের ক্ষেত্রে এই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
মেধা ৯৩ ভাগ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ ভাগ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ ভাগ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য শতকরা ১ ভাগ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোটার আসন পূরণ না হলে মেধা তালিকা থেকে পূরণ হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে। তবে থাকছে না নারী, জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা নাতি কোটা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রীসভার আরো তিন সদস্যকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল হয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, কোটার অনুপাত কম বেশি করা নিয়ে সরকার আপাতত হাত দেবে না কারণ সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রতিপালন করে সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব সরকার নেবে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হলে সরকার তা বিবেচনা করবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী কোটা আন্দোলন ঘিরে দুর্বৃত্তায়নের বিচার অপরাধ অনুযায়ী হবে বলেও উল্লেখ করেন।
আন্দোলনের উপর ভর করে দুর্বৃত্তরা ডেটা সেন্টার পুড়িয়ে ফেলায় সারা বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার পর সহিংসতায় হতাহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা জানা যাবে বলে জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের কথা রেখেছি। এই প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। যে পরিপত্রটা ২০১৮ সালে দেওয়া হয়েছিল সেটাও বাতিল করা হয়েছে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। কোটা সংস্কারের যে রায় সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ দিয়েছে তা কিন্তু আমরা প্রতিপালন করেছি। যে সহিংসতা হয়েছে, এতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার দেখভাল করবে। কোটা বিরোধী আন্দোলন করছিলেন তাদের ব্যাপারে যদি কোন মামলা হয়ে থাকে সেগুলো আমরা অবশ্যই দেখবো। যদি পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা কোন অপশক্তি করে সেটার ব্যাপারে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার পরিবেশ সরকার তৈরি করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যে ছাত্র-ছাত্রীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছিল সংস্কার চেয়ে, আমরা সংস্কার করেছি। এখন তাদেরও একটা কর্তব্য আছে, জনগণ মনে করে তাদের তা করা উচিত। এখন তাদের স্ব স্ব জায়গায় ফিরে গিয়ে পড়াশুনা শুরু করা উচিত। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এই আহ্বানও জানান।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা শুধু কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের কোটা সংক্রান্ত আন্দোলনে ছিল না, বিএনপি, জামায়াত, ইসলামিক ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলের যারা, তারা জঙ্গি হয়ে এই আন্দোলনে সংযুক্ত থেকে দেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
নারী কোটা না থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নারীরাই তো এই আন্দোলনের সময় বলেছিল, তারা যথেষ্ট ক্ষমতাবান হয়ে গেছে তাদের এই কোটার দরকার নাই, আপিল বিভাগ যদি সেটা কানে শুনে থাকে তাহলে আমার কিছু করার নাই।