হরতাল-অবরোধ
নিজাম সিদ্দিকী »
দেশের অর্থনীতিবিদ, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি সর্বজনগ্রাহ্য পন্থা খুঁজে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তাঁরা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বজায় রাখা এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে এ মুহূর্তে হরতাল-অবরোধের মতো সংঘাতময় পরিস্থিতির ইতিবাচক সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করেন।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই পৌনে দুই বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতেই সংকটে আছে দেশের অর্থনীতি। নতুন করে সংকট দানা বেধেছে সাম্প্রতিক ফিলিস্তিন-ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধের কারণেও। ফের রাজনীতির মাঠ সহিংস হয়ে উঠলে দেশে অর্থনীতিতে সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তাঁরা।
হরতাল-অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টের মধ্যে পড়েন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা। এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে মানুষের নাভিশ্বাস, এর মধ্যে সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষ যদি কাজে বের হতে না পারে তাহলে তাদের অবস্থা আরও সংকটময় আকার ধারণ করবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে হরতাল-অবরোধের সংস্কৃতি ফিরে এলে আমদানি-রফতানি খাতের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়ার শংকা রয়েছে। তাছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করলে বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে নেতিবাচক তথ্য যাবে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ তো দূরের কথা, বিনিয়োগ ঋণ পেতেও বাংলাদেশকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।
অপরদিকে, দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান মালিকদের পক্ষ থেকেও বর্তমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান আশা করা হয়েছে। তাঁদের মতে, বর্তমানে অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি করা যাচ্ছে না। কাঁচামালের অভাবে অনেক কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনেও যেতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সমঝোতাপূর্ণ অবস্থানে উপনীত হওয়ার আহ্বান জানান।
চলমান এই অর্থনৈতিক সংকটের এসময়ে আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে আগামী বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) পর্যন্ত টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। গত রবিবার দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
শনিবার বিএনপি’র সমাবেশে ‘হামলা, হত্যা, গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ এবং সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে বিএনপি প্রায় আট বছর পর এ অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবীর রিজভী জানান, সারাদেশে সর্বাত্মকভাবে অবরোধ পালিত হবে। এর আওতায় থাকবে রেলপথ, রাজপথ এবং নৌপথ।