‘সরকারের উচিত ২ বছরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা করা’

চোরতন্ত্র নিয়ে যা বললেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

শ্বেতপত্র প্রকাশ নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

সুপ্রভাত ডেস্ক »

অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত অবিলম্বে একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ করা।

‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির। তবে বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো মূল খাতগুলোর রূপরেখার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা থাকা উচিত।’

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এই কৌশলগুলো অবশ্যই সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সময় গৃহীত অযৌক্তিক সিদ্ধান্তগুলো পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অন্তত দুই বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা উচিত। তবে এর সময়কাল পরিবর্তিত পরিস্থিতির ভিত্তিতে সামঞ্জস্য করা যেতে পারে।’

পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হলে তা মূল্যায়ন ও আগামী ছয় মাসের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ থাকা উচিত বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় যখন আপনি কাউকে দায়িত্ব দেন, সেটা আইনসভা বলেন বা নির্বাহী বিভাগ বলেন অথবা বিচার বিভাগ— তারা সকলে যখন গোষ্ঠীবদ্ধভাবে একটি চুরির অংশ হয়ে যায় তখন সেটাই চোরতন্ত্র। আর দেশে চোরতন্ত্র সৃষ্টির উৎস গত ৩টি নির্বাচন।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, চোরতন্ত্রের ভেতরে আপনি দেখবেন একটি রাজনৈতিকগোষ্ঠী, একটি আমলাগোষ্ঠী এবং আমলা যখন বলি আমরা তখন— উর্দি পরা এবং উর্দি ছাড়া দুটোর কথাই বলছি। রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ী এই তিন সহযোগে চোরতন্ত্র হয়।

তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি বলেন, এই চোরতন্ত্রের উৎস কোথায়? তাহলে উৎসে ফিরে যেতে হবে ২০১৮-এর নির্বাচন। তারপর ২০২৪-এর নির্বাচন। গত তিনটি নির্বাচন বিষবৃক্ষ সৃষ্টি করেছে এই চোরতন্ত্রে। এবং এর ভেতর দিয়ে আমার দেশে যে মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো ছিল, যে জবাবদিহির জায়গা ছিল, সেই জায়গাগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনের ভেতর যে কথাগুলো-পরামর্শগুলো আছে, সেগুলো কী আগামী দিনে এতিমের মতো ঘুরে বেড়াবে? নাকি কেউ দায়িত্ব নিয়ে অভিভাবকত্ব নিয়ে বাস্তবায়নের পথে এগোবো। আমরা মনে করি, ন্যূনতম একটা দুই বছরের পরিকল্পনা সামনে থাকা উচিত। আর এই সময়ের মধ্যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে।