সয়াবিন তেল নিয়ে কী হচ্ছে!

একটি স্থানীয় দৈনিকের খবরে দাবি করা হয়েছে, গত শনিবারের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বাস গ্রুপের সয়াবিন সিড বোঝাই ৪৪টি লাইটারেজ জাহাজ বিভিন্ন নদী বন্দরে ভাসছে। এর মধ্যে রূপসী ঘাটে রয়েছে তাদের ৮টি জাহাজ, আশুগঞ্জ ঘাটে ২টি, কাঁচপুর ঘাটে ২৯টি, নগরবাড়ী ঘাটে ২টি, ঝালকাঠি ঘাটে ১টি, পাগলা ঘাটে ১টি এবং নিতাইগঞ্জ ঘাটে ১টি সয়াবিন সিড বোঝাই জাহাজ ভাসছে। ফ্রেশ গ্রুপের আমদানি করা সয়াবিন সিড নিয়ে ১২টি জাহাজ অলস ভাসছে। এর মধ্যে দাউদকান্দি ঘাটে ১টি, তৈলব ঘাটে ১টি, মেঘনা ঘাটে ৯টি এবং পটুয়াখালী ঘাটে ১টি জাহাজ সয়াবিন সিড নিয়ে ভাসছে। অথচ এসব সিড থেকে সয়াবিন উৎপাদন করে বাজারে ছাড়া হলে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছার পরও খালাস না করে জাহাজে মজুত করে রাখা সয়াবিন সিডের পরিমাণ ৮৯ হাজার ৮৫০ টন। রমজানের বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রচুর পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। আমদানি হয়েছে সয়াবিন সিডও। কিন্তু বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিলেও বিপুল পরিমাণ সয়াবিন সিড (তেলের মূল উপকরণ) ভাসমান জাহাজে রয়েছে। যা দ্রুত খালাস করা হলে বাজারে তেলের সংকট অনেকাংশে কমে যেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পত্রিকায় বলা হয়েছে, একসময় দেশের ভোজ্যতেলের বাজারে বড় বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থাকলেও বর্তমানে হাতে গোনা দুয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আলোচিত প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ভোজ্যতেলের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রক ছিল। তারাও অনেকটা কোণঠাসা হয়ে রয়েছে। এতে করে বর্তমানে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি ছোট প্রতিষ্ঠানের সাথে দু–তিনটি বড় প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। ফ্রেশ গ্রুপ ও বিশ্বাস গ্রুপ এমন দুটি প্রতিষ্ঠান। এ দুটি গ্রুপ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সয়াবিন সিড আমদানি করলেও এর একটি বড় অংশ জাহাজে রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতিতে জানা গেছে, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রমজানে চাহিদার পরিমাণ ৩ লাখ টন। ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৮ টন। এছাড়া দেশীয় উৎপাদন করা হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টন। আমদানি পর্যায়ে এখনো পাইপলাইনে আছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৫৬৫ টন। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য নিম্নমুখী হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ট্যারিফ কমিশনের এ প্রতিবেদন অনুযায়ী সয়াবিন তেলের দাম নিম্নমুখী হওয়ার কথা। কিন্তু উলটো বাড়ছে।
মূল কথা হচ্ছে, বাজারে সয়াবিন তেল নেই। যতক্ষণ অভিযান চলে ততক্ষণ তেল পাওয়া যায়। অভিযান শেষ তেলও শেষ। এখন তো পত্রিকায় প্রকাশও হলো তেল নিয়ে কী হচ্ছে। প্রশাসন নিশ্চয়ই এবার ব্যবস্থা নেবে!