ঢাকায় দেশের বড় দুই দলের রাজনৈতিক সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে গত দুই দিন চলেছে নানা নাটকীয়তা। পরে বুধবার রাতে বিএনপি একদিন পিছিয়ে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার কথা জানায়। এরপর ভেন্যু প্রস্তুতে সময় লাগবে এমন যুক্তিতে আওয়ামী লীগও সমাবেশ পিছিয়ে দেয়।
দুই দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে দেশের রাজনীতিতে বর্তমানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পর্যবেক্ষকরা সংঘাতের আশংকাও করছেন। সমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য দুই দলের জন্য চৌহদ্দি নির্ধারণ করে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আওয়ামী লীগের সমাবেশ ও মাইকিং মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে শুরু করে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। অন্যদিকে, বিএনপিকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল পর্যন্ত সভা-সমাবেশ ও মাইকের ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আন্দোলন হবে বা সমাবেশ হবে এটাই স্বাভাবিক। দেশে এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশ সরগরম। দুই প্রধান দল সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ কম যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে। মাঝেমধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলেও তা বেশিদূর এগোচ্ছে না। এটা আশার কথা। আগের নির্বাচনগুলোর আগে যেমন সংঘর্ষে জড়িত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, এবার তেমনটি ঘটছে না। এমন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কতদিন বজায় থাকবে- তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই এমন আশঙ্কা জনমনে। যেকোনো কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জনজীবনে যাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, সেটি দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
দেশের যেকোনো রাজপথ বন্ধ করে সমাবেশ করা হলে তাতে জনদুর্ভোগ চরমে উঠবেই। কিন্তু কখনো এর অর্থনৈতিক মূল্য হিসাব করা হবে না। দুঃসহ যানজটকে আরও তীব্রতর করতে পারে রাজপথকেন্দ্রিক কোনো একটি ছোটখাটো কর্মসূচিও।
জনগণ কার সঙ্গে আছে তার একমাত্র মাপকাঠি হলো নির্বাচন। নির্বাচনে অংশ নিয়েই তা প্রমাণ করতে হবে। নির্বাচনে না গিয়ে অন্য কোনোভাবে ক্ষমতায় যাওয়া মোটেও সম্ভব নয়। আর এ কাজটি করতে গেলেই সংঘর্ষ অনিবার্য। সবাই দেশের কথা ভেবে, জনগণের কথা ভেবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবে। আর এতেই দেশের মঙ্গল।
রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিশোধপরায়ণতার রাজনীতি পরিহার করে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে এটা আমাদের প্রত্যাশা। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়ার বিকল্প নেই। দেশের স্বার্থেই সমাবেশ হোক শান্তিপূর্ণ।
এ মুহূর্তের সংবাদ