‘জামালখানের কাউন্সিলর প্রার্থীকে মারধর করা হয়েছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বি এড কলেজ, বাকলিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও বাকলিয়া সরকারি স্কুল থেকে শুরু করে সব কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে যদি এজেন্টরাই থাকতে না পারে তাহলে এটা তো একটা কঠিন অবস্থা। আমাদের যারা চিহ্নিত ভোটার আছে, তাদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে নগরীর পশ্চিম বাকলিয়ার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (বিএড কলেজ) ভোট কেন্দ্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ভোট দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তিনি পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘এনআইডি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলা হয়েছিল। আমি এখানে হাজার হাজার বহিরাগত দেখতে পাচ্ছি। এখানে কার এনআইডি চেক করা হয়েছে আমি সিএমপিকে প্রশ্ন করতে চাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্র পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে এই নির্বাচন করা হচ্ছে। এখানে আওয়ামী লীগের সাথে আমাদের কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। এখানে নির্বাচন হচ্ছে আমাদের সাথে প্রশাসনের। আমরা চেয়েছিলাম একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন। আজকে কোভিড-১৯ কে উপেক্ষা করে ঘরে ঘরে গিয়ে গত ৮ থেকে ১০ মাস আমরা কাজ করেছি, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ভোটের অধিকার নেই, নিঃশেষ হয়ে গেছে। ১২ বছরে এই সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকের এই নির্বাচনের শুরুটা যেভাবে হয়েছে, মনে হয় ভোট ডাকাতির এই কালচার চলতে থাকবে এবং একটি অধ্যায় রচিত হবে।
রিটার্নিং অফিসারকে বিষয়গুলো জানানো হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহাদাত বলেন, ‘আমি হাসানুজ্জামানকে সকালে বলেছি, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টকে বের করে দেওয়া হচ্ছে, অনেকে আহত হয়েছে।
উনি বলেছে ঠিক আছে, কেন্দ্রের নাম বলেন। অলরেডি জামালখান ওয়ার্ডের কমিশনার প্রার্থীকে খাস্তগীর থেকে মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে।
ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আপনাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। ভোট সেন্টারে যান। আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত আছি। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা দেখতে চাই, তাদের এই উলঙ্গতা, এ নগ্নতা, তাদের ভোট ডাকাতি কোথায় গিয়ে ঠেকে।
তিনি আরো বলেন, মেয়ে এজেন্টদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি। ভোর ৬টা থেকে আমি মনিটরিংয়ে আছি। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ফোন আসছে এজেন্টরা সেন্টারে যেতে পথে পথে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এরপর সকাল ৭টার পর থেকে যে ফোনগুলো আসল এখানে অধিকাংশ কেন্দ্রে এজেন্টরা ঢুকতে পারছে না এবং প্রথম কলটি আসল জামালখানের খাস্তগীর স্কুল থেকে সেখানে কাউন্সিলর প্রার্থী এবং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে।
জামালখানের আরেকটি সেন্টারে তিনজন মেয়ের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। এরপর ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডে সিআরবি সেন্টারে সেখানে ৫ জন এজেন্টকে মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর ৮টা দিকে বিএড কলেজ, বাকলিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও বাকলিয়া সরকারি স্কুল থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আমার কেন্দ্র এবং আমার বাড়ি বাকলিয়ায়। আমার সেন্টার থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে জঘন্য আর কি হতে পারে? এর আগে ২০১১ সালে আমি যখন জেলে ছিলাম এখানে আমাকে ভোট দেওয়া হয়েছিল মাত্র ১১টা। অথচ আমার বাড়িতে ভোট আছে পঞ্চাশটা। তাহলে এই হচ্ছে চিত্র। এদিকে গতকাল দুপুরে রিটার্নিং অফিসারের কাছে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করেন ডা. শাহাদাত।