সবুজ মেলায় গাঁদা ফুল চারার দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক »

তিলোত্তমার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে চকবাজারের প্যারেড মাঠে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী ‘সবুজ মেলা’। ৮ অক্টোবর এ মেলাটি শুরু হয়। মেলায় সতের থেকে আঠারো স্টলে ফল-ফুল এবং ঔষধি চারার সমাহার। বিকেল দিকে জমে ওঠে মেলার প্রাঙ্গণ। মেলায় আসা দর্শনার্থীরা ফুলের চারায় বেশি কিনছেন। তবে চাহিদার শীর্ষ স্থান দখল করেছে গাঁদা ফুল।

কাতালগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন মনির খান। তিনি কাশবন নার্সারি, আরণ্যক নার্সারি, ফতেয়াবাদ নার্সারি ঘুরে ঘুরে শেষে বাহাদুর নার্সারি থেকে ১৫টি গাঁদা ফুলের চারা ক্রয় করেন। ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি চারা। তবে তিনি পরিমাণে বেশি চারা ক্রয় করায় প্রতি পিস ৪৫ টাকা দরে নেন।

তিনি বলেন, সামনে আসছে শীতকাল। ছাদ জুড়ে গাঁদা ফুল বসিয়ে দেব। কারণ শীতকালেই গাঁদা ফুলের মোক্ষম সময়। দামও কম পেয়েছি, সেই সাথে পরিবারের সবাই ফুলটিকে ভালোবাসে।

সিটি কলেজের ছাত্রী ঝর্র্না সাহা কসমো নার্সারি থেকে ৫টি গাঁদা ফুলের চারা নিয়েছেন। তিনি বলেন, গাঁদা ফুল আমার খুব প্রিয়। শীতকালে ঠিকমতো চারাগুলো যতœ নিলে অসংখ্য ফুল আসে। ঠাকুর প্রার্থনার কাজে ফুলগুলো ব্যবহার করতে পারি।

নার্সারির মালিকরা বলছেন, মেলায় এবার ফলের চারার চাহিদা খুব কম। কারণ বর্ষাকালকে বিদায় জানিয়ে শরৎকাল এসেছে। আর কিছুদিন পর শীতকাল। দর্শনার্থীরা দেশি ফুল বেশি নিচ্ছেন। তারমধ্যে শীর্ষে গাঁদা ফুল। সেই সাথে বেগুন, টমেটোসহ শীতকালীন সবজি চারার চাহিদাও কম নয়।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, গাঁদা ফুলের চারা ৫০ টাকা, জিনিয়া ৫০ টাকা, কসমস ৪০ টাকা, ভিমকা ৩০ টাকা, গ্রাফ্ট কামিনী ১৫০-১০০০ টাকা, মোড়ক ফুল ৩০ টাকা, গোলাপ ১২০ টাকা, নয়ন তারা ৩০ টাকা, জবা ফুল ১৫০ টাকা, গন্ধরাজ ১৫০-২০০ টাকা, বেলি ফুল ৩০-৪০ টাকা, চায়না টিপু ৩৫০ বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া রয়েছে, রঙ্গন ফুলের চারা, ম্যান্ডেভিলা, এরোমেটিক জুঁই, বাসন্তী, মৌচান্ডা ফুল, সিলভার কুইনের চারাগুলো ১৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মধ্যে বেগুন চারা ১০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, বাতাসা মরিচের চারা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি, লাউ, টমেটো, বেগুনের বীজও মেলায় পাওয়া যাচ্ছে।

তিলোত্তমা’র প্রতিষ্ঠাতা শাহেলা আবেদিন বলেন, মেলাটি চট্টগ্রাম প্যারেড কর্নারে হচ্ছে। চট্টগ্রামের চকবাজার গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘনবসতি একটি এলাকা। এখানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল, চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ এছাড়া রয়েছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার। মেলায় আমাদের জীবনে গাছের গুরুত্ব, গাছের বিকল্প অন্য নেই বিষয়টি অনুভব করানোর জন্য তরুণদের আকৃষ্ট করতে চেয়েছি। আমি মনে করি এখানে সফল হয়েছি। কারণ মেলায় সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায়। তারা বড়দের গাছ কেনা দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তারা বুঝতে পারছে নিজের, পরিবারের এবং দেশের জন্য হলেও গাছ লাগাতেই হবে।