রাজিব শর্মা »
বাজারে শীতের আগাম সবজি আসায় সাধারণ সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে নিত্যপণ্যের দামে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এসব পণ্যের দাম এখনো চড়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের ফিরিঙ্গী ও রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম ফলনের শীতকালীন শাকসবজি। এরই প্রভাবে দীর্ঘদিন পর কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া গোল বেগুন এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। ১০০ টাকার লম্বা বেগুনের দাম এখন ৬০ টাকা । দাম কমেছে টমেটো, মিষ্টি কুমড়ো, কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার। ১৪০ টাকার টমেটো এখন ১২০ টাকা, ৬০ থেকে ৭০ টাকা কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার দাম এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। এর মধ্যে গাজর ১৬০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, আলু ২৫ টাকা ও শসা ৮০ টাকায়ে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। গত সপ্তাহে কাচামরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়।
সবজির বাজারে আসা ক্রেতা মো. আবু হানিফ বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় কয়েকটি সবজি কম দামে কিনতে পেরেছি। তবে প্রায় সবজির দাম এখনো সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবলী ফারুক বলেন, বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি আসছে। তাই কয়েকটা সবজির দাম কমেছে। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে আসবে। আগামী মাস থেকে সবজির দাম নিম্নমুখী হতে পারে।
অপরিবর্তিত মাছের দাম
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। গতকাল বাজারে রুই মাছ ২ কেজি থেকে আড়াই কেজির দাম ৪৫০ টাকা, দেড় থেকে ২ কেজির দাম ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, এক থেকে দেড় কেজির দাম ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর এক কেজির কমগুলোর দাম ২৮০ টাকা। বড় সাইজের ভোল পোয়া মাছ ৩৮০ থেকে ৬০০ টাকা, মৃগেল মাছ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, এক কেজি থেকে কিছুটা বেশি পাঙাশের দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেড় কেজির বেশি পাঙাশের দাম ২৫০ টাকা, শিং মাছ সাড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, বোয়াল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্রয়লার ১০ ও ডিম ৫ টাকা কমেছে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা কমে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর অপরিবর্তিত রয়েছে সোনালি, পাকিস্থানি কক, লেয়ার ও দেশি মুরগির দাম। বাজারে সোনালি ও লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর দেশি মুরগি ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া গত একবছর ধরে কমতির কোন সুখবর নেই গরু ও ছাগলের মাংসের দাম। বাজারে গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ৫ টাকা করে কমেছে ডিমের দামও। গতকাল বাজারে ফার্মের লাল ডিম ১৩০ টাকা ও সাদা ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে পরিবর্তন আসেনি দেশি হাঁস ও মুরগির ডিমের দাম । দেশি মুরগির ডিম ১৮০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২০০ টাকা দরে খুচরায় বিক্রি হয়েছে।
অপরিবর্তিত মসলার বাজার
দুয়েকটা পন্যের দর ওঠানামা করলেও গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও মুদিপন্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ৯০ থেকে ১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৬০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাশকলাইয়ের ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ১০০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকা । এছাড়া এলাচ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১ হাজার ৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১ হাজার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে রেয়াজউদ্দিন বাজারে আসা ক্রেতা এনায়েত বাজারের বাসিন্দা মো. আসফাক আলম বলেন, ‘বাজার মনিটরিং করায় কিছুদিন দাম কমতি ছিল। কিন্তু গত দুই মাস ধরে দৃশ্যমান কোনো তদারকি না থাকায় পুরোনো সিন্ডিকেট আবার নতুন করে সক্রিয় হয়েছে বলে মনে হয়। বাজার তদারকিতে প্রশাসন জোরদার ভূমিকা না রাখলে অসাধু ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বাজার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ
পাবে।




















































