রুমন ভট্টাচার্য :
বাজারে প্রায় এক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে বিভিন্নরকম সবজির দাম। সামনে আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা।
সরবরাহ বাড়ায় কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে লেয়ার ও সোনালী মুরগি ও ডিম। অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দামও।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) বাজার ঘুরে দেখা যায়, গাজরের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ববরটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুনের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহেও এ সবজিগুলোর দাম বেশি ছিল বলে জানান বিক্রেতারা।
শুধু বেগুন, গাজর কিংবা টমেটো নয়; কাঁচাবাজারে এখন সব ধরনের সবজির দাম বেশি। চিচিংগা ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫০, কাচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কচুর লতি ৫০, লাউ ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি গত সপ্তাহের চেয়ে আরো ১ টাকা বেড়ে ৩৩ টাকা এবং দেশি আলু কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।
চকবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. রাজ্জাক বলেন, ‘প্রায় ১ মাস ধরে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ছে। কারণ বাজারে সবজির সরবরাহ কম। দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সামনে সবজির দাম আরো বাড়তে পারে।’
সবজির পাশাপাশি চড়া দাম কাঁচামরিচ ও ধনেপাতার। কাঁচামরিচের কেজি ১০০ টাকা ও ধনে পাতার কেজি ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে ধনে পাতার কেজি ছিল ১০০ টাকা।
এদিকে, ডিমের দাম অপবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের দামে বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১০০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৩০ এবং ১০০ পিস কোয়েলের ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমবিক্রেতা আলী আজম বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিমের ১০০ টাকা থেকে ১০৫ টাকায় উঠানামা করছে। তিনি বলেন, ফার্মে এখন ডিম উৎপাদন কম গেছে।’
অন্যদিকে মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা এবং পাকিস্তানি সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চকবাজারের মুরগিবিক্রেতা মো. আমিন বলেন, ‘মুরগির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। সামনে আরো কমতে পারে। কারণ সামনে আসছে কোরবান তখন চাহিদা কমে যাবে।’
অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। গতসপ্তাহের দামে গরুর মাংস হাড় ছাড়া ৭০০ থেকে ৭৫০ ও হাঁড়সহ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজি, ডিমের দাম কিছুটা বাড়লেও স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, রসুন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।
চলতি সপ্তাহে মাছের দামও তেমন একটা বাড়েনি। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হতে দেখা যায় বিভিন্নরকম দেশি মাছ। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, কাতলা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ব্রিগেড ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ (ফার্ম) ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। এছাড়া পাঙাশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, মাগুর বড় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিংড়ি ৪৮০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
আর ইলিশ মাছ এক কেজি ওজনের ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ থেকে ৭৫০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ ভালো। মোটামুটি ক্রেতাদের হাতে নাগালে রয়েছে মাছের দাম, তেমন একটা বাড়েনি। তবে ইলিশের দাম কমেনি।’
এ মুহূর্তের সংবাদ