সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লড়াই জমবে

নিজস্ব প্রতিনিধি, সন্দ্বীপ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ এর আর মাত্র ১৩ দিন বাকি, এরই মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন সন্দ্বীপের প্রার্থীরা। বিশেষ করে গত দুবারের এমপি, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যেই ভোটের মাঠে মূল লড়াইটা জমবে বলে ভোটারদের মতামতে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যদিও মাঠ জরিপে এখনো নৌকার পাল্লাই ভারী, তবে বাকি দিনগুলোতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের জোয়ার আনা অসম্ভব কিছু নয়।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নৌকা ও ঈগল প্রার্থীর অবিরাম মাইকিং এর পাশাপাশি মশালের প্রচারণাও সমান তালে চলছে। এছাড়া সন্দ্বীপ উপজেলা সদরসহ পৌরসভা ও ইউনিয়নের হাট বাজারগুলোতে প্রার্থীদের পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে। চলছে টানা গণসংযোগ, পথসভা ও মিছিল-সমাবেশ।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যেমন রয়েছে, তেমনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষেও পরীক্ষিত, ত্যাগী অনেক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ইতোমধ্যে এ দু’প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন নির্বাচনী সংঘর্ষ হয়েছে। এ নিয়ে এখনো সন্দ্বীপের সর্বত্র দু’পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবীর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে প্রদত্ত ক্ষমতা ও নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সন্দ্বীপের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর। কাউকেই এক চুল পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না। নির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যে সন্দ্বীপে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সন্দ্বীপে আসতে শুরু করেছেন।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে, এমন সুযোগ কাউকেই দেয়া হবে না, তিনি জোর দিয়ে বলেন- সন্দ্বীপের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করা হবে যাতে ভোটাররা তাদের পছন্দমত প্রার্থীকে নির্ভয়ে-নিঃসংকোচে ভোট দিতে পারেন। আমরা ভোটকে উৎসবমুখর করতে চাই, এ জন্যে ভোটকে অবাধ, স্বচ্ছ ও পক্ষপাতহীন করতে চাই।’
এবার নির্বাচনে সন্দ্বীপে মাহফুজুর রহমান মিতা- আওয়ামী লীগ (নৌকা), ডা. জামাল উদ্দীন চৌধুরী স্বতন্ত্র (ঈগল), ডাকসুর সাবেক ছাত্র সংসদ নেতা জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নুরুল আকতার জাসদ (মশাল), এম এ ছালাম জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা, সীতাকুণ্ড তাহের-মঞ্জুর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম), নুরুল আনোয়ার হিরণ বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা), মুহাম্মদ উল্যা খান, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ও মো. আব্দুর রহিম আজাদ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার)- এ ৮টি দল অংশ নিচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্দ্বীপের ৮৪টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯১৪ জন পুরুষ ও নারী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।