করোনায় মাস্ক পরা নিশ্চিতে সুজনের ক্যাম্পেইন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষায় জনসাধারণকে সচেতন করতে মাস্ক পরা নিশ্চিতে নগরীর পাঁচ পয়েন্টে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মী, চট্টগ্রাম সিটি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) কর্ণফুলী রেজিমেন্ট’র সমন্বয়ে চেকপোস্ট বসিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং, সিটি গেট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন মোড়ে এ লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, রেড ক্রিসেন্ট ও বিএনসিসির একটি যৌথ টিম মাঠে নেমেছে। অপর একটি টিম কাজ করছে নগরীর শপিংমল, কাঁচা বাজারগুলোতে।
মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে সিটি করপোরেশনের নেয়া কার্যক্রমের তদারকি করতে গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় প্রথমে নগরীর সিটি গেট, অক্সিজেন মোড় ও শাহ আমানত ব্রিজ এলাকা প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি সিটি গেটে আন্তঃজেলা, অক্সিজেন মোড়ে চট্টগ্রাম উত্তর ও শাহ আমানত সেতু এলাকায় দক্ষিণ জেলা থেকে শহরে প্রবেশ করা বেশকিছু দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, লরি থামিয়ে চালক-হেলপার ও যাত্রীগণ মাস্ক পরিধান করছেন কিনা তা তল্লাশি চালান। এসময় তিনি যারা মাস্ক পরিধান করেনি তাদের শহরে ঢুকতে না দিয়ে বুঝিয়ে নিজ বাসস্থানে ফেরত পাঠান। সে সময় রেড ক্রিসেন্ট ও বিএনসিসির কর্মীগণ জনসাধারণকে মাস্ক পরা করতে মাইকিং এর পাশাপাশি হ্যান্ডবিল, প্রচারপত্র বিলি করেন।
পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, করোনা মোকাবেলায় আমাদের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো মানুষকে সচেতন করা। একমাত্র সচেতনতায় পারে এই সংক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করতে। কোভিড-১৯’র দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চট্টগ্রাম শহরেও সংক্রমণ মারত্মকভাবে বেড়েছে। নগরীর স্বনামধণ্য অনেক ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হয়েছেন। পত্রিকা-গণমাধ্যম মারফত আমরা সংক্রমণ ও মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান দেখছি তা দিয়ে সঠিকতা নির্ণয় করলে হবে না। অনেকে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করলেও সামাজিকভাবে তা চেপে রাখেন। কারণ এতে মৃত্যুবরণ করলে আত্মীয়-পরিজন সমাজের লোকেরা জানাজা ও দাফন কাফনে অংশ নিতে চান না। এটা আরেক সামাজিক বিড়ম্বনা। অথচ চিকিৎসকদের মতে মৃত্যুর পরে কোন লাশে করোনার কোন জীবানু থাকে না। কাজেই এর মাধ্যমে করনোয় সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ তেমন নাই বললেই চলে। বরং জানাজা বা জমায়েতে উপসর্গ আছে এরকম যেকোন উপস্থিত ব্যক্তি থেকে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই ভ্যাকসিন বা টিকা না আসা পর্যন্ত আমাদের স্বাস্থবিধি মেনে মাস্ক পরিধান করে, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কোন বিকল্প নেই। জনসাধারণকে মনে রাখতে হবে এখন পর্যন্ত মাস্কই টিকা। কোনভাবেই মাস্ক পকেটে, থুতনিতে রাখা যাবে না। যথা নিয়েমে নাক মুখ ঢেকে তা পরিধান করতে হবে।
প্রশাসক বলেন, আমি চাই আমার প্রিয় প্রাণের চট্টগ্রাম নগরীর ৬০ লাখ অধিবাসী স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকুক। এই কঠোরতা নগরবাসীর ভুল বুঝার কোন অবকাশ নাই। দেশের স্বার্থে নগরবাসী আমাকে ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরশেনকে সহযোগিতা করবে এটাই প্রত্যাশা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, মাস্ক পরা মানে ৮০ ভাগ নিরাপদ। তিনি বলেন, বর্তমানে সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে লকডাউন দেয়ার পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে এটা সম্ভব না। তাই সচেতন হয়ে এই দুর্যোগ কাটাতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী, প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) কর্ণফুলী রেজিমেন্টের কমান্ডার মেজর এ কে এম শামসুদ্দিন, সার্জেন্ট বশীর হেলাল, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার, চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম চৌধুরী, রেড ক্রিসেন্টের সব্যসাচী দেবনাথ, রাহাত ইসলাম, তমা দেব নাথ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
এ মুহূর্তের সংবাদ