নিজস্ব প্রতিবেদক »
সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর অনেকের নাম ওঠে আসে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেন ২৭ প্রার্থী। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকার টিকিট পেয়েছেন সংগঠনটির মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শনিবার (২৫ মার্চ) মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী হিসেবে নোমান আল মাহমুদকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্বে থাকা নোমান আল মাহমুদ ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের আদর্শ নিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৭১-৭৩ সালে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ’৭৪-৭৭ সালে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হন। ’৭৯ সালে যুবলীগে মহানগর কমিটির সদস্য হন। প্রায় পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এবার তিনি প্রথমবারের মতো সংসদীয় আসনে নিজ সংগঠন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।
মনোনয়ন পাওয়ার সংবাদে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে নোমান আল মাহমুদ। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, আমার সংগঠন চট্টগ্রাম-৮ আসনের জন্য আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার খবর পেয়েছি। আমি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মী। এই আসনে মনোনয়ন পেতে অনেক নেতাকর্মী চেয়েছেন। কিন্তু সংগঠন আমাকে তৃণমূলের কর্মী হিসেবে মূল্যায়ন করেছে। এজন্য আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সংগঠনের সকল নেতাকর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞ।
নির্বাচনে জয়ী হলে আসনের কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আসনে দীর্ঘদিনের চাওয়া কালুরঘাট সেতু। এই সেতুর কাজ আল্লাহ কার হাতে করাবেন তা বলতে পারছি না। তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এছাড়াও এলাকার মানুষদের সঙ্গে বসব। তাদের কথা শুনে এই অল্প সময়ে কি কি করতে পারি তা দেখবো।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, মোহরা, ষোলশহর এবং বোয়ালখালী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন সারোয়াতলী, পশ্চিম গোমদ-ী, পূর্ব গোমদ-ী, কধুরখীল, শাকপুরা, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহল্লা করলডেঙ্গা নিয়ে গঠিত সংসদীয় চট্টগ্রাম-৮ আসন। ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মইন উদ্দীন খান বাদল সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ ও সর্বশেষ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর মইন উদ্দীন খান বাদল ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরও মৃত্যু হয়। এরপর এ শূন্য আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেন দলটির ২৭ জন নেতাকর্মী।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে আগামীকাল ২৭ মার্চ পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ৫ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৬ এপ্রিল। আগামী ২৭ এপ্রিল এই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।