মিরসরাইয়ে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সংঘর্ষে আহত ১৫
ভেঙ্গে ফেলা হয় অর্ধশত চেয়ার
সাময়িক বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল
নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই :
চারিদিকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির পুত্র আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান রুহেলের ছবি। ব্যানারে ছেয়ে গেছে উপজেলার মিরসরাই মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। বুধবার (১১ নভেম্বর) বিকালে ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান।
এ বছর অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে প্রধান অতিথি করা হয় আইটি বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রুহেলকে। কিন্তু অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে এসে শ্লোগানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে পণ্ড হয়ে যায় সভা। এতে আহত হয় কমপক্ষে ১৫ জন। বক্তব্য না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন মাহবুবুর রহমান রুহেল।
আহতরা হলেন, যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী মাইনুর ইসলাম রানা, যুবলীগ কর্মী মো. শাকিল, মিয়া খান, পিংকু, জুয়েল, নুরুচ্ছাপা, হৃদয়, ইমন, নোমান, আমজাদ, মো. হারুন, আবুল কালামসহ কমপেক্ষ ১৫ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার বিকালে মিরসরাই মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়ে শুরু হয় বক্তব্য প্রদান। কিন্তু প্রধান অতিথি আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান রুহেল বক্তব্য দেওয়ার আগ মুহূর্তে শ্লোগানকে কেন্দ্র করে শুরু হয় সংঘর্ষ। শ্লোগান পাল্টা শ্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে পাথর, লাঠি ও সমাবেশে থাকা চেয়ার দিয়ে হামলা চালায়। এতে কয়েকজন যুবলীগ কর্মী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে না পেরে প্রধান অতিথি নিজেই সমাবেশ বন্ধ ঘোষণা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবলীগ কর্মী জানান, সমাবেশে মাহবুবুর রহমান রুহেল ছাড়া অন্য কারো নামে শ্লোগান দেয়া নিষেধ ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী মাইনূর ইসলাম রানার সমর্থকরা রানার নামে শ্লোগান দিতে থাকে। মঞ্চ থেকে অতিথিরা বারবার নিষেধ করা শর্তেও শ্লোগান বন্ধ না রাখায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে।
হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরো জানা গেছে, হামলায় মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মাইনুর ইসলাম রানাসহ প্রায় ১৫ জন ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হন। তাদের স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এদের মধ্যে কালামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করানো হয়।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নুরুল মোস্তফা মানিক জানান, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভা শুরু হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের শেষের দিকে শ্লোগানকে কেন্দ্র করে কিছু যুবক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
মিরসরাই থানার পরিদর্শক (অপারেশন) দীনেশ চন্দ্র দাশগুপ্ত জানান, শ্লোগানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহত কয়েকজন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার কারণ জানতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।