শেষ হলো সংস্কারকাজ

কালুরঘাট সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক »

দফায় দফায় কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ পিছিয়ে যাওয়ায় পরিবর্তন করতে হয়েছে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের সময় (ট্রায়াল রান)। এতে পরিবর্তন আনতে হয়েছে রেলমন্ত্রীর সফরসূচিতেও। তবে দীর্ঘদিন আলোচনায় থাকা এ সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার। ফলে ২ নভেম্বর বুয়েট বিশেষজ্ঞ দল এবং ৭ নভেম্বর রেলমন্ত্রী ট্রায়াল রানে যাওয়ার সময় নির্ধারিত হয়েছে বলে জানা যায়।

রেলসূত্রে জানা যায়, দোহাজারী থেকে চকরিয়া এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ৩৯টি ব্রিজ ও আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে প্রতিবন্ধকতা ছিলো দুই জায়গায়। একটি হলো- আগস্টের বন্যায় সাতকানিয়া ও বান্দরবান সংলগ্ন এলাকায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যটি হলো- কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজে দেরি হওয়া। তবে দুটি কাজ বর্তমানে শেষ হয়েছে।

সাতকানিয়া ও বান্দরবান সংলগ্ন এলাকায় রেললাইন প্রসঙ্গে রেল দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তগীনের কাছে। তিনি বলেন, ‘কিছু খুটিনাটি কাজ বাকি ছিলো। কাজগুলো শেষ হয়েছে। এ কাজগুলো শেষ হওয়া পরই ট্রায়াল রানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু কালুরঘাট সেতু সংস্কারকাজের জন্য শিডিউলে একটা পরিবর্তন হয়েছে। ওটা চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাহেব দেখছেন তো, ওটা নিয়ে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না।’

কালুরঘাট সেতু নিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘আমি কিছুদিন দেশের বাইরে থাকায় কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ কতটুকু পর্যায়ে আছে তা ঠিক বলতে পারছি না। তবে কাজ খুব দ্রুত গতিতে করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, ট্রায়াল রানের আগেই আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারবো।’

কতটুকু অগ্রগতি তিনি দেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রায় দুইশয়ে’র বেশি কর্মী নিয়ে এ সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে, যেন দ্রুত শেষ করা যায়। সংস্কারকাজে সেতু থেকে রাস্তার কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। মূল কাঠামো মজবুত করার জন্য ইস্পাতের কাঠামো পরিবর্তন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিলো।’

ট্রায়াল রানে রেলমন্ত্রীর পরিদর্শন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রায়ালরান তো ঠিক সময়ে হতো। কিন্তু কালুরঘাট সেতুর কাজটা দেরি হওয়ায় শিডিউলটা পেছাতে হয়েছে। ওরা কাজটা ২০ তারিখে শেষ করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটা তো হয়নি। তবে আজকে (সোমবার) তারা সংস্কারকাজ শেষ করার কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার বা বুধবার তারা নিজেরা একটা ট্রায়াল রান করবে। এরপর ২ নভেম্বর বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল একটি ট্রায়াল রান পরিচালনা করবে। সেখানে যদি কোনো ছোটখাটো কাজ বাকি থাকে তা পাঁচ দিনের মধ্যে শেষ করার সুযোগ থাকবে। তবে ওরকম কোনো সমস্যা হওয়ার শংকা নেই। সব ঠিকঠাক থাকা স্বাপেক্ষে রেলমন্ত্রী মহোদয় ৭ তারিখ ট্রায়াল রানে যাবেন।’

প্রসঙ্গত, ট্রায়াল রানের পর ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন ও রেলস্টেশন উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করতে আরও সপ্তাহ-দশদিন সময় লাগতে পারে। এছাড়া এই রুটে নয়টি রেলস্টেশনের মধ্যে ছয়টির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানা যায়।