সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
বীরেন্দ্র শেবাগকে ধ্বংসাত্মক ভারতীয় ওপেনার হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ডানহাতি ব্যাটসম্যান তার কেরিয়ারের বিভিন্ন পর্যায়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শচীন টেন্ডুলকার উভয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন। উভয়ের সঙ্গেই সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হন। প্রথম বল থেকেই বোলারদের অফসেট করা, পাল্টা আক্রমণ করে বোলারদের মনবল ভেঙে দেওয়াই ছিল নজফগড়ের নবাবের বিশেষ দক্ষতা। এমনকি বিশ্বের সেরা বোলিং ইউনিটগুলিও শীর্ষে থাকা অবস্থাতেও বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানে পরিণত হয়েছিলেন বীরু। ওয়ানডে ক্রিকেটে তেন্ডুলকরের পরেই সেহওয়াগ দ্বিতীয় ভারতীয় ছিলেন। শুধু তাই, ভারতের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন বীরু। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি তার কেরিয়ারে দু’বার পৌঁছেছেন এই ল্যান্ডমার্কে পৌঁছেছেন।
তবে শেবাগ যদি পুরো কেরিয়ারে মিডল-অর্ডারেই ব্যাটিং করতেন তাহলে তার কেরিয়ারের অন্যরকম হতে পারত। ভারতীয় দলের মিডল-অর্ডার সেই সময় ছিলেন শচীন, সৌরভ, ভিভিএস লক্ষ্মণ এবং রাহুল দ্রাবিড় সমৃদ্ধ। সুতরাং এই পরিস্থিতে শেবাগ মিডল-অর্ডারে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে জায়গা পাওয়ায় কঠিন হয়ে যেত।
কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের প্রাক্তন ডিরেক্টর জয় ভট্টাচার্য, স্পোটাইফ এবং ইউটিউবে আপলোড করা ওক্ট্রি স্পোর্টসের উপস্থাপিত ২২ ইয়ার্ন পডকাস্টের একটি পর্বের হোস্ট গৌরব কাপুরের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান, তৎকালীন ভারত অধিনায়ক সৌরভই শেবাগের কেরিয়ার গড়ে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘যুবরাজের দিকে তাকাও, শেবাগের দিকে তাকাও। শেবাগের জন্য সৌরভ কী করেছিলেন, তা আপনি জানেন। শেবাগকে সৌরভ বলেছিলেন, ‘দেখো মিডল-অর্ডারে খুব ভিড় রয়েছে। ভারতের হয়ে খেলতে চাইলে তোমাকে ওপেন করতে হবে। আমি, টেন্ডুলকার, লক্ষ্মণ, দ্রাবিড়- তুমি কোথায় সুযোগ পাবে? মিড- অর্ডারে ভিড় থাকায় যুবরাজ সিং এত বছর সুযোগ পাননি। যাও ওপেন করো।’
সৌরভের পরামর্শ ওপেন করতে নেমে সফল হয়েছিলেন। বাকিটা ইতিহাস। ২০০১ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডে ম্যাচে শেবাগ প্রথমবারের জন্য ভারতের হয়ে ওপেন করেন। কিন্তু চূড়ান্ত ব্যর্থ হন। প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন বীরু। কিন্তু সৌরভ একই অবস্থানে অনঢ় থেকে শেবাগকে ওপেন করতে পাঠান। একই সঙ্গে বীরুকে বলে দেন, তুমি চিন্তা করো না, ব্যর্থ হলেও তুমি আরও সুযোগ পাবে। ক্যাপ্টেনের থেকে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস পেয়ে পরের ম্যাচেই তার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন বীরু।
শেবাগ তার কেরিয়ারে ১০৪টি টেস্টে ২৩টি সেঞ্চুরি-সহ ৮,৫৮৬ রান করেছেন। আর দেশের হয়ে ২৫১টি ওয়ান ডে ম্যাচে ১৫টি সেঞ্চুরি-সহ ৮,২৭৩ রান করেন নজফগড়ের নবাব।
খবর : কলকাতাটোয়েন্টিফোর’র।
খেলা