নিজস্ব প্রতিবেদক »
দেশের এবং ব্যবসায়ীদের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে দেশের সমৃদ্ধির সাথে যে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও সমৃদ্ধি আসছে সেটি যদি অব্যাহত রাখতে হয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে যদি দেশ পরিচালনা করতে পারেন তাহলে আমাদের দেশকে আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো। অন্যতায় আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো না।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে যখন সারাদেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছিল মানুষের ওপর, তখন চট্টগ্রামের সীতাকু-ে মুরগি এবং গরু ছাগলের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এটার কারণ হচ্ছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট হচ্ছে বাংলাদেশের ইকোনমিক লাইফলাইন, সেটাকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য। তখন আমাদের সরকার সমস্ত প্রোটেকশন দিয়ে রপ্তানিসহ সবকিছু চালু রেখেছিল। তারা যদি আবার সুযোগ পায় দেশটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিবে। আজকে দেশ সমৃদ্ধ হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধি আসছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখন বিদেশে বিনিয়োগ করছে, এটি জননেত্রী শেখ হাসিনা না হলে হতো না। এখানে যদি আবার অন্য সরকার আসে এগুলো সব বন্ধ হয়ে যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ এমপি, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, চেম্বার পরিচালক ও সিআইটিএফ-২০২৩ এর চেয়ারম্যান এ কে এম আকতার হোসেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও এগিয়ে যাওয়া নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করে, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রশংসা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে যে বার্তা পাঠিয়েছেন সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রশংসা করেছেন। আজকে সমগ্র বিশ্ব প্রশংসা করে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশের একটি বিরোধী দল বিএনপিসহ তার দোসররা প্রশংসা করতে পারে না।
তিনি বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা পদ্মা সেতু দিয়ে ওপারে গিয়ে জনসভা করে বলেন, দেশে কোন উন্নয়ন হয় নাই। অথচ তারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়েই গেলেন। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলেন কিছুই হয় নাই। যাদের চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির তাদেরকে কেউ আলোও দিতে পারবে না, শ্রবণশক্তিও দিতে পারবে না। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি- আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
এফবিসিসিআই ও চট্টগ্রাম শিল্প বণিক সমিতিসহ সব সমিতিকে অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর সব দেশে দেখতে পাই যখন পূজা-পার্বণ-উৎসব হয় তখন পণ্যের দাম কমে। আমাদের দেশে যখন উৎসব হয় তখন পণ্যের দাম বাড়ে। যখন আমাদের কোন উৎসব হবে, সেটি ঈদ-রোজা-পূজা যেটিই হোক তখন যেন পণ্যের দাম কমানোর মানসিকতা ব্যবসায়ীরা রাখে।
তিনি বলেন, যারা মজুদদারি করবে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এফবিসিসিআই ও বণিক সমিতি যদি ব্যবসায়ীদের ডেকে বলেন- যারা পণ্যের দাম কমাবে তাদেরকে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেয়া হবে। প্রয়োজনে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। তাহলে আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতিটা চালু হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা নির্বিঘেœ ব্যবসা করেছে এবং সব ব্যবসায়ীর সমৃদ্ধি হয়েছে। দেশের সমৃদ্ধির সাথে সাথে প্রত্যেকটি ব্যবসায়ীর সমৃদ্ধি এসেছে। আপনারা যদি নিজের কাছে প্রশ্ন করেন ১৪ বছর আগে আপনার ব্যবসার কি ব্যাপ্তি ছিল, এখন ব্যাপ্তি কোথায়।
তিনি বলেন, আমাদের জিডিপির আকার ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। আজকে সেটি পৌনে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় ছিল ৬শ ডলার, সেটি ২৮শ ডলারের উপরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে আইএমএফের প্রাক্কলন অনুযায়ী আমরা মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি। মানব উন্নয়ন সূচক, অর্থনৈতিক সূচক, সামাজিক সূচক ও স্বাস্থ্য সূচকসহ সমস্ত সূচকে অন্তত সাত বছর আগে আমরা পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। মানব উন্নয়ন সূচক, সামাজিক সূচক এবং স্বাস্থ্য সূচকে আমরা ভারতকেও অতিক্রম করেছি। অর্থনৈতিক সূচকে মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে ২০২১ সালে আমরা ভারতকে অতিক্রম করেছি।