শেখ হাসিনার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচারে ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, শেখ হাসিনার দেওয়া বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য বন্ধ করার উদ্দেশে তারা এই আবেদন করেছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আবেদন ট্রাইব্যুনাল শুনেছেন এবং আবেদন ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন যে, যেসব হেটস্পিচ এখনো বিদ্যমান আছে, সেগুলো যেন অতিদ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় এবং ভবিষ্যতে যেন তার কোনো ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার বা প্রকাশ করা না হয়।

ট্রাইব্যুনাল আরও বলেছেন, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে মামলার বিচারের সময় সাক্ষী এবং ভুক্তভোগীদের ট্রাইব্যুনালে আনা যাবে না।

প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব এক্সসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে ট্রাইব্যুনালের আদেশটি পৌঁছানো হবে।

শেখ হাসিনার ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ বলতে যা বুঝিয়েছে প্রসিকিউশন

‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রসঙ্গে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিমের বলেন, এই ট্রাইব্যুনালের অধীনে চলমান বা তদন্ত চলমান কোনও মামলার আসামি বিদ্বেষমূলক কোনও বক্তব্য দিতে পারবেন না, যাতে করে এই মামলা তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা সাক্ষীরা ভীতিগ্রস্থ হন। কিছু মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামি শেখ হাসিনার বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘২৮৭টি মামলা হয়েছে, মানে ২৮৭ জনকে মার্ডার করার লাইসেন্স পেয়েছে। তোমাদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে, তাদের কি বাড়িঘর নেই?’ এসব শব্দ দিয়ে মূলত মামলার ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

তামিম আরও বলেন, ‘যেসব ভুক্তভোগী ও সাক্ষীরা আমাদের কাছে এসে জবানবন্দী দিয়ে গেছেন, তাদের কিন্তু ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিতে হবে। শুধু তাই নয়, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে সারা বিশ্বের সব আইনেই ক্রিমিনাল অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। যেটি করা হচ্ছে সেটি বন্ধের জন্য; ইতিমধ্যে যেসব  প্রচার-প্রকাশ হয়েছে সেগুলোসহ সব বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার বন্ধে আমরা আবেদন করেছিলাম। ট্রাইব্যুনাল আমাদের আবেদন শুনেছেন। আমাদের ট্রাইব্যুনালের আইন, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন সম্পর্কে শুনেছেন, সব শুনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন যেন ভবিষ্যতে বিদ্বেষমূলক কোনও বক্তব্য প্রচার বা প্রকাশ না পায়। যা ইতিমধ্যে প্রকাশ বা প্রচার হয়েছে তাও সরিয়ে ফেলতে বলেছেন আদালত। আমরা একজন আসামির ক্ষেত্রেই এই আবেদন করেছিলাম।’