মঙ্গলবার নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৪তম সাধারণ সভায় মেয়র কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে চট্টগ্রামের যোগাযোগ অবকাঠামোকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা।
‘তবে, এ প্রকল্পগুলোর সুফল তৃণমূলের জনগণের কাছে নিয়ে যেতে স্থানীয় পর্যায়ে কাউন্সিলরদের তদারকি করতে হবে। কোন প্রকল্পের কাজ যাতে নিম্নমানের না হয় সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের নজর রাখতে হবে।
দেরিতে হলেও প্রয়োজনীয় কথাটি তিনি উচ্চারণ করলেন। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন যাতে প্রতিনিধিরা সর্বক্ষেত্রে জনগণের স্বার্থ দেখেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেকক্ষেত্রে তাদের হতাশ হতে হয়। অনেক জনপ্রতিনিধির কার্যকলাপে জনগণের আশাভঙ্গ হয়। নির্বাচিত হয়ে তাঁরা ভুলে যান ভোটারদের কথা।
মেয়র আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলেছেন। সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালকে বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল করার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেছেন, চসিক জেনারেল হাসপাতালকে ডেডিকেটেড শিশু হাসপাতাল করা যায় কী না সে বিষয়টি আমার বিবেচনায় আছে। যেহেতু পাশেই একটি মাতৃসদন হাসপাতাল আছে, একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চট্টগ্রামবাসীর জন্য অনেক সুফল বয়ে আনবে।
চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল করার পরিকল্পনা আছে সরকারের। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে শিশু হাসপাতাল করার। চট্টগ্রামে স্থান সংকটের কারণে এতদিনেও তা সম্ভব হয়নি। সিটি করপোরেশনের জেনারেল হাসপাতালটির অবকাঠামো থেকে সবকিছুই চালু আছে ফলে তা ডেডিকেটেড শিশু হাসপাতালে রূপান্তর করলে নগরবাসী খুবই উপকৃত হবে।
সেসঙ্গে তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ গড়ে তোলা হবে জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করতে চাই। হালিশহর, চান্দগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করে সেগুলোতে শিশুদের খেলার ব্যবস্থা করা হবে। কাউন্সিলররা এ বিষয়ে উদাসীন হলে চলবে না। কারণ, এ মাঠগুলো হলে অভিভাবকরা স্বস্তি পাবেন।
এই সিদ্ধান্তও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আমাদের শিশুরা এক কৃত্রিম পরিবেশে বড় হচ্ছে। ঘরের চার দেয়ালের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগই নেই তাদের। ইন্টারনেটপ্রবণ শিশুদের জন্য খেলার মাঠ করা গেলে তাতে শুধু শিশুরা উপকৃত হবে তা নয়, বড়রাও উপকৃত হবে কারণ এই নগরে তো কোথাও একটু খোলা জায়গা নেই। বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই।
এছাড়া নগরীর লেন-বাইলেনগুলো মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের নামে নামকরণ করে তাতে সংক্ষিপ্ত জীবনী সংবলিত পাথরের ফলক স্থাপন করার কথাও বলেন তিনি।
আশা করব, সিটি মেয়রের এ পরিকল্পনা ও ভাবনা শুধু যেন কথার কথা না হয়ে বাস্তবে রূপ নেয়। তাহলে মেয়রের প্রতি প্রসন্ন হতো নাগরিক।
এ মুহূর্তের সংবাদ