নিজস্ব প্রতিবেদক »
পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ও ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি নুরনবী ওরফে ম্যাক্সন এর মরদেহ ভারতের কলকাতা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ম্যাক্সনের পরিবারের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বায়েজিদ থানা পুলিশ। ম্যাক্সনের মৃতদেহের ছবি অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কালিগঞ্জে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের ‘হাই-প্রোফাইল’ এই সন্ত্রাসীর। বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, ‘ম্যাক্সনের মৃত্যু নিয়ে প্রশাসনিকভাবে এখনও নিশ্চিত নই। সকালে ম্যাক্সনের ছোট ভাই ও স্ত্রী বিষয়টি জানান। তাদের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়েছি। তারা জানান মঙ্গলবার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কালিগঞ্জে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানিয়েছি।’
ম্যাক্সনের ছোট ভাই আবছার উদ্দিন বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে কলকাতার বর্ধমান জেলার কালিগঞ্জে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। অনামিকা নামের এক নারী আমার ভাইকে ভারতের গ্রিন কার্ড, আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে আবারও ওই নারী আমাদের কাছে টাকা দাবি করেন। রাতে তার মৃত্যুও সংবাদ পেয়েছি। ধারণা করছি ওই নারীই ভাইয়ের মৃত্যুর সাথে জড়িত।’
নগর পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটি এসবি) সূত্রে জানা গেছে, সিএমপির’র পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’ নুরুন্নবী ওরফে ম্যাক্সনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছিল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে। তার বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় সাতটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত ম্যাক্সন এ কে ৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি নিয়ে ২০১১ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন পুলিশের হাতে। ওই মামলায় তাকে ২১ বছরের কারাদ-ের আদেশ দেন আদালত। পরে এক সময় জামিনে বেরিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান তিনি।
চট্টগ্রামের অপরাধ জগতে মানিকজোড় হিসেবে পরিচিত ম্যাক্সন ও সারোয়ার ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে কাতার চলে যান। কাতারে বসে দেশীয় অনুসারীদের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতো। কাতারে মারামারিতে জড়ালে সে দেশের পুলিশ তাদের কাতার থেকে বের করে দেয়। ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কাতার থেকে দেশে ফিরে আসলে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হয় সারোয়ার। তবে ম্যাক্সনের অবস্থান ছিল রহস্যঘেরা। অবশেষে গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার হওয়ায় তার অবস্থান সনাক্ত হয়।