নিজস্ব প্রতিবেদক »
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএএ) আসন্ন দ্বিবার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে ফের উত্তেজনা সৃস্টি হয়েছে। এবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে অনেক প্রার্থী ও সমিতির সদস্য তাদের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেন নি বলে অভিযোগ করেছেন।
গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। আগামী ৯ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রার্থীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, রোববার সকাল থেকেই স্থানীয় একদল যুবক নগরের আগ্রাবাদের মক্কা-মদিনা টাওয়ারে বিএসএএ অফিসের প্রবেশপথে অবস্থান নেয় এবং কিছু প্রার্থীর প্রতিনিধিদের আটকে দেয়। ফলে এসব বহিরাগতদের প্রতিরোধের মুখে তারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে কন্টিনেন্টাল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আহসান ইকবাল চৌধুরী গতকাল (৯ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার বিএসএএ চট্টগ্রাম নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান কমোডোর (অব.) এ. জেড. এম জালাল উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পত্রে তিনি গত রোববার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘বিএসএম-এর অনেক ভোটারদের কাছ থেকে আমার কাছে খবর এসেছে যে, তাঁরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং বহিরাগতদের তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছেন। এদিন সকাল থেকেই স্থানীয় কিছু সংখ্যক যুবক আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার মক্কা মদিনা টাওয়ারে বিএসএএ অফিসের প্রবেশদ্বারে ব্যানার ঝুলিয়ে এবং কিছু প্রার্থীর প্রতিনিধিদের অবরুদ্ধ করে অবস্থান নিয়েছিলেন, যা এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসাবে আমার জন্য সম্পূর্ণ বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল।’
আহসান ইকবাল চৌধুরী তার অভিযোগপত্রে এই অনাকাংখিত পরিস্থিতি তদন্তের অনুরোধ জানান। তিনি তাঁর জোটের অন্তত ২৭ জন সমমনা সদস্য নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ১০ থেকে ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছিলেন বলে অভিযোগ করেন। বাকিদের প্রতিরোধ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
সিকম শিপিংয়ের পরিচালক এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জহুর আহমেদও একই অভিযোগের কথা জানান।
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী একই ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে দাবি করেন।
এদিকে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বহিরাগতদের উপস্থিতির বিষয়ে অফিসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেন নির্বাচন বোর্ডের সদস্য ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
দেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে যখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধারের যাত্রায় রয়েছে তখন এই ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে (রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর) ‘বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ী ফোরামে’র নামে বহিরাগতরা ব্যানার ঝুলিযে নির্বাচনে ‘স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সহযোগীদের’ প্রতিহত করার আহ্বান জানায়।
অভিযোগ রয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করেছিলেন বিএসএএ সদস্য ও প্রার্থী মশিউল আলম স্বপন, যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সাথে জড়িত।
অভিযোগ অস্বীকার করে মশিউল আলম স্বপন বলেন, বিএসএএ সদস্যদের সাথে বিরোধ ছিল এমন কিছু স্থানীয় লোকজন ব্যানার ঝুলিয়ে থাকতে পারে। তিনি কোনও প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এমন দাবিও প্রত্যাখ্যান করেন।
বিএসএএ সূত্র জানায়, গত ১৩ এপ্রিল ২৪ সদস্যের বিএসএএ বোর্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একদল ব্যবসায়ীর বিক্ষোভের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায় । এ গ্রুপে মশিউল আলম স্বপনও ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মার্চ মাসে, তারা নির্বাচন বাতিল এবং একটি মনোনীত কমিটি গঠনের দাবি জানান। প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসাবে চিহ্নিত করেন।
১৪ জুলাই নবগঠিত নির্বাচনী বোর্ড ৯ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ পুননির্ধারণ করে। যদিও নির্বাচনকে ঘিরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্যানেল ঘোষণা করা হয়নি। দুটি গ্রুপ প্রতিযোগিতার জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যায়।