নগরীর অতি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল শাহ আমানত সেতু, ২০১০ সালে এই সেতুটি উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে। কিন্তু সংযোগ সড়কের মতো অপরিহার্য দিকটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা কর্তৃক গুরুত্ব না দেওয়ায় সেতুর সংযোগস্থল এবং সড়কের আশপাশে নিত্য যানজট, দুর্ঘটনা লেগে থাকে। অনেক মারাত্মক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটেছে কয়েকবার।
এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নেয় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। নতুন ব্রিজ থেকে রাজাখালী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার অংশে ৬ লেনের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলেও এই প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনসাধারণ। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬ লেন সড়কের উভয়পাশে ২ লেন কার্যত অকেজো থাকে, গাড়ি রেখে সড়ক দখল করেছে অনেকে। পথচারীদের চলার পথ বেদখল হয়েছে নানাভাবে, সড়কের ওপর কোথাও গ্যারেজ বানিয়ে গাড়ি মেরামত করা হচ্ছে। মোটকথা ৬ লেন সড়ক কার্যত ৪ লেনে পরিণত হয়েছে ।
অন্যদিকে শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বরের চারপাশে গাড়ির স্টপেজ তৈরি করা হয়েছে। নগরীর দিকে নামার মুখে পুলিশ বক্স পর্যন্ত গাড়ি থেমে থাকে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আগেও বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে, কোন ফল হয়নি।
সেতু এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ আছে, তাহলে অনির্ধারিত বাস স্টপেজ কিভাবে বানানো হয়! ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার এই হাল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অজানা থাকার কথা নয় কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা কোন সময়ই নেয়া হয় না। সড়ক ও সেতুর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, তারা স্বীকার করেছে যে ৬ লেনের সুফল জনগণ পাচ্ছে না। সংস্থাটি সড়ক দখল থেকে বিরত থাকতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি, মাইকিং করেছে বলে জানায়, শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে সবকিছু উচ্ছেদ করে দেবে মর্মে সওজ বলেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিষয়টি তো স্বল্পসময়ের নয়, দীর্ঘদিন থেকে সড়কের ওপর এসব অবৈধ, গণস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপ চলে আসছে কিভাবে? সুযোগসন্ধানী আর গণবিরোধীচক্রের সড়ক দখল, পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল কি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলির অগোচরে ঘটেছে? তাদের ম্যানেজ না করে এ ধরণের দুর্বৃত্তপনা কিভাবে সম্ভব! জনগণের অর্থ খরচ করে ৬ লেন সড়ক বানানো হয়েছে, অথচ তার পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সিএমপির উপকমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) ৬ লেন সড়কটির ব্যবহার নির্বিঘœ করতে পদক্ষেপ নেবেন বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
আমরা আশা করি, শাহ আমানত সেতু এলাকা এবং ৬ লেন সংযোগ সড়ক এর সম্পূর্ণ অংশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করে যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা পরিহারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি। উচ্ছেদ অভিযানের পর নতুন করে যাতে কেউ সড়ক দখল করতে না পারে, স্টপেজ কিংবা অস্থায়ী টার্মিনাল বানাতে না পারে সে ব্যাপারে নিয়মিত নজরদারি থাকা চাই।
মতামত সম্পাদকীয়