পশুত্ব ক্রমাগত হিংস্র হয়ে উঠছে। শিশু দুর্বল। সে প্রতিবাদে সমর্থ নয়, প্রতিরোধে অক্ষম। গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রামে নানা টোপ দিয়ে শিশুদের ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটছে। শিশু বর্ষা, আয়াত ও সুরমা খুনের পর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে এবার চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রী আবিদা সুলতানা আয়নী। তার বয়স ১০ বছর। আয়নীকে ধর্ষণের পর বালিশচাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে। গত পরশু বুধবার সকালে নগরের পাহাড়তলী থানার পুকুরপাড় মুরগির ফার্ম এলাকার একটি ডোবা থেকে আয়নীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পিবিআই। ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতারের পর তার দেখানো মতে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণের পর খুন করে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে দেয়া হয়।
শিশুর ওপর এ বর্বরতার শেষ কোথায়। একের পর বর্বরতার শিকার হচ্ছে অবোধ শিশু। বেড়েই চলছে যৌন হয়রানি। বাড়ির আঙিনা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েশিশুরা কোথাও যেন নিরাপদ নয়।
ধর্ষণ রোধ করে শিশুদের নিরাপদ রাখার জন্য যে ধরনের অবকাঠামো, লোকবল বা সেবা দরকার সেগুলো এখনো অনেক কম। অপরাধ দমনে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ। এসব ক্ষেত্রে অপরাধীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার করতে হবে।
বর্তমানে শিশু নির্যাতন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। শিশু নির্যাতন কমেনি বরং নির্যাতনের ধরন আরও মর্মান্তিক, পৈশাচিক হয়েছে। শিশু নির্যাতনের ধরন বদলেছে। আর এটা হয়েছে সামাজিক অস্থিরতা এবং বিচার না হওয়ার কারণে। বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কারণেই শিশু নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। কিন্তু শিশু নির্যাতন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বর্ষা, আয়াত, সুরমা ও আয়নীসহ সকল শিশুর নৃশংস হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার চাই আমরা। মানুষরূপী দানবদের কারণে নির্যাতনের পরিসংখ্যানে প্রতিদিন একটির পর একটি ঘটনা যোগ হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানী, মানবাধিকারকর্মী ও আইনজ্ঞসহ সমাজের সব পেশা-শ্রেণির মানুষের দাবি এখন একটাই, শিশুদের ওপর বন্ধ হোক নির্যাতন। শাস্তি হোক দানবের। এমন শাস্তি হোক যার ফলে আরেকটিও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
শাস্তি হোক দানবের
বর্ষা, আয়াত, সুরমা ও আয়নীসহ সকল শিশু হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার চাই