সুপ্রভাত ডেস্ক »
আসন সমঝোতা নিয়ে ১৪ দলের শরিকদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করলেও কোন কোন আসনে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, সেটি জানানো হয়নি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে জানাবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। খবর বিডিনিউজের।
সোমবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জোটের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের সময়ই ক্ষমতাসীন দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের ক্ষুদে বার্তা পাঠান।
এতে বলা হয়, শরিকদের আসন নিয়ে জানাতে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন সাধারণ সম্পাদক।
২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও। তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে আসেনি, জাতীয় পর্টিকেও জোট হয়নি।
২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছে, এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এসব আসনেই জয় পায় দলটি। একাদশে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে। এবার অবশ্য দলটিকে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না।
গত নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদেরকে ১৬টি আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থীরা ভোট করে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায়, জাতীয় পার্টি (জেপি) দুইজন প্রার্থী তাদের দলীয় প্রতীক বাইসাইকেল নিয়ে ভোটে অংশ নেয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫টি আসন পায় ওয়ার্কার্স পার্টি। আসগুলো ছিল ঢাকা-৮, রাজশাহী-২, বরিশাল-৩, ঠাকুরগাঁও-৩ ও সাতক্ষীরা-১। এর মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী ও সাতক্ষীরায় জয় পায় দলটি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ পায় তিনটি আসন। এগুলো হলো কুষ্টিয়া-২, ফেনী-১ ও বগুড়া-৪। দলটির দুই নেতা জয় পায় কুষ্টিয়া ও ফেনীতে।
বিকল্পধারাকে দেওয়া হয় মুন্সীগঞ্জ-১ ও লক্ষ্মীপুর-৪ ও মৌলভীবাজার-২ আসন। তাদের প্রার্থীরা জয় পান মুন্সীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুরে।
তরীকত ফেডারেশন পায় লক্ষ্মীপুর-১ ও চট্টগ্রাম-২ আসন। দলটির প্রার্থী জয় পান চট্টগ্রামে। জাতীয় পার্টি (জেপি) পায় কুড়িগ্রাম-৪ ও পিরোজপুর-২ আসন। এর মধ্যে পিরোজপুরে জয় পায় পিরোজপুরে।
বাংলাদেশ জাসদ পায় চট্টগ্রাম-৮ আসন। সেই আসনে বিজয়ী প্রার্থী মইন উদ্দীন খান বাদল ২০২০ সালে মারা গেলে আওয়ামী লীগের নেতা মোসলেম উদ্দিন আহমেদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
তারও মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। ২৭ এপ্রিল আবার উপনির্বাচন হলে জয় পান আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ।এই আসনগুলোর বাইরে আরও অনেকগুলোতে এসব দলের একক প্রার্থী ছিল।
এবার দুটি আসন ছেড়ে ২৯৮ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে তারা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে যাবে, এ কথা নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে জানিয়েছে আগেই। একইভাবে ১৪ দলের শরিক দলগুলোও আলাদাভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারির ভোটকে সামনে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন। সেদিনই জানা যাবে, কারা হবেন চূড়ান্ত প্রার্থী। শেষ দিন জোটের প্রধান দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তার নিজের ও শরিকদের নাম পাঠাবে নির্বাচন কমিশনে।
রোববার বিকালেই ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু জানান, সোমবার জোটনেত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে শরিক দলগুলোকে নিয়ে বসবেন।
সন্ধ্যায় এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
শরিক দলগুলোর মধ্যে ছিলেন ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা; জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার; জাতীয় পার্টি (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।