১৯৯৭ সালের পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত নীরব এলাকা। স্থান এবং এর গুরুত্বের বিবেচনায় রেখে দিন ও রাত্রির ভেদে নীরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, মিশ্র ও শিল্প এলাকার শব্দের সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শব্দদূষণের প্রধান উৎস যানবাহনের হর্ন। এ ছাড়া ইঞ্জিন, কলকারখানা, নির্মাণকাজ, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানও শব্দদূষণের বড় উৎস। শব্দদূষণের প্রভাব ব্যাপক।
শব্দদূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক অবসাদসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত, শিশুরা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কারণ তাদের উপর শব্দদূষণের প্রভাব স্থায়ী হতে পারে। গর্ভবতী নারীরা অতিরিক্ত শব্দদূষণের শিকার হলে সন্তানদের বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মানুষের শ্রবণ ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে শব্দের মাত্রার একক মান নির্ধারণ করেছেন। যাকে ডেসিবেল বলে। কোন এলাকায় কত ডেসিবেল শব্দ করা যাবে তাও নির্ধারণ করে দিয়েছেন তারা। বাংলাদেশে শব্দদূষণ (নিযন্ত্রণ) বিধিমালা–২০০৬ অনুযায়ী এলাকা ভেদে শব্দের মানমাত্রা স্থির করা হয়েছে। তা নীরব এলাকায় দিনে ৫০, রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ রাতে ৪৫ মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০, রাতে ৫০ বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০, রাতে ৬০, শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫, রাতে ৭০ ডেসিবেল হতে পারে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কী তা একটু দেখা যেতে পারে। চট্টগ্রামের ইপিজেড মোড় এলাকায় এই মাত্রা ১৩০ দশমিক ৬, জিইসি মোড়ে ১২০, আন্দরকিল্লা ১২০ থেকে ১৩০ ডেসিবেল। টাইলস ও অ্যালুমিনিয়াম কাটার সময় নির্জন আবাসিক এলাকায় ডেসিবেল ৮০ থেকে ১৩০ পর্যন্ত ওঠানামা করে।
এ পরিস্থিতি শুধু চট্টগ্রামে নয়। সবকটি বিভাগীয় শহরে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
ক্ষতিকর এই শব্দদূষণ থেকে বাঁচতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজটিও করতে হবে।