লোকসানের বোঝা লাগেজ ভ্যান নিয়ে কী করবে রেল কর্তৃপক্ষ

দুই বছর আগে কম সময়ে স্বল্প খরচে কৃষিসহ নানা পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ট্রেনগুলোতে লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হয়।
প্রতিটি লাগেজ ভ্যান চীন থেকে কেনা হয় ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি ৫ লাখ টাকায়। রেলওয়ের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এসব লাগেজ ভ্যান কিনতে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার চুক্তি হয় চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। সেই সময় ৮ থেকে ৯ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিটি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের দাম পড়ে ৩ কোটি ৫ লাখ এবং প্রতিটি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের দাম ধরা হয় ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীন থেকে আমদানি করা হয় ১২৫টি লাগেজ ভ্যান। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের বহরে যুক্ত করা হয় এসব। এর মধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ। এর মধ্যে রয়েছে ২৮টি ফ্রিজিং লাগেজ। এর আগে পুরনো লাগেজ ভ্যান ছিল ৫০টি, যার ১৮টি সচল ছিল।
লাভের কথা বলা হলেও বাস্তবে রেলের লাগেজ ভ্যানগুলো প্রতিনিয়ত লোকসানের বোঝা বাড়াচ্ছে। প্রয়োজন নেই জেনেও লাভ দেখিয়ে রেলওয়ের সেই সময়কার কিছু কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে লাগেজ ভ্যান কিনতে বিপুল টাকা ব্যয় করা হয় অভিযোগ আছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থে কেনা লাগেজ ভ্যানগুলো এখন অনেকটা রেলের বোঝা পড়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের এই লাগেজ ভ্যানে কোনো আগ্রহ নেই। অনেকগুলো লাগেজ ভ্যান অলস পড়ে আছে।
রেলওয়ের কমার্শিয়াল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে ৭ লাখ থেকে ২২ লাখ টাকা আয় হচ্ছে এসব লাগেজ ভ্যান থেকে। কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে সমীক্ষা হলেও কৃষক কিংবা ব্যবসায়ীদের চাহিদা, বাজার যাচাই না করে ব্যক্তিস্বার্থে কেনা হয় লাগেজ ভ্যান। প্রয়োজন নেই জেনেও লাভ দেখিয়ে রেলওয়ের সেই সময়কার কিছু কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে এই লাগেজ ভ্যান কিনতে ব্যয় হয় ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। লাভের পরিবর্তে এগুলো এখন রেলওয়ের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। তাই এখন লাগেজ ভ্যান পরিচালনার দায়িত্ব বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
অথচ রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকট চলছে অনেক বছর ধরে।ইঞ্জিনের অভাবে অনেক প্রয়োজনীয় লাইনে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ইঞ্জিন না থাকায় যেখানে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে সেখানে কোন যুক্তিতে লাগেজ ভ্যান কেনা হলো, তাতে কার কার স্বার্থ রক্ষিত হলো তা খতিয়ে দেখা জরুরি।