সুপ্রভাত ডেস্ক »
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমে বিপদে পড়ে যায়। ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন লিটন দাস। ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেননি লিটন কুমার দাস। পরে তার সঙ্গে যোগ দিয়ে ইনিংস বড় করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে চরম বিপর্যস্ত পরিস্থিতি থেকে টেনে তুললেন লিটন দাস। তার দারুণ সেঞ্চুরির পর আফিফ হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান করেছে তামিম ইকবালের দল। লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ১০২ রান, আফিফ করেছেন ৪৫, মাহমুদউল্লাহ করেন ৩২ রান।
পেস বান্ধব কন্ডিশনে ব্যাট করতে গিয়েই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভার থেকে আসেনি কোন রান। তৃতীয় ওভারের ব্লেসিং মুজারাবানির প্রথম বলেই কাবু তামিম। লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ধরা দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তিনে নেমেই ব্যাটে বল লাগিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ভালো টাচে শুরুটা কাজে লাগল না। অস্থির হয়ে গেলেন দ্রুতই। বেশ কয়েকবার পরাস্ত হয়ে অস্বস্তিতে পড়া এই ব্যাটসম্যান মুজারাবানির বলে সহজ ক্যাচ দেন পয়েন্টে।
মোহাম্মদ মিঠুন নেমেছিলেন মুশফিকুর রহিমের জায়গায়। কিন্তু সুযোগটা বিফলে হারালেন তিনি। লিটনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের আভাস দিয়েও তা নিভেছে দ্রুত। ১৯ বলে ১৯ করা মিঠুন টেন্ডাই চাতারার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে দেন ক্যাচ।
লিটন পরে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেনকে । তবে এই জুটির অবদানও কেবল ১৭। এনগারাভার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে মোসাদ্দেকও ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৭৪ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে বাংলাদেশ।
এরপর লিটনের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদউল্লাহ। শুরুতে সময় নিয়ে থিতু হওয়া লিটন পরিস্থিতির দাবি মেটচ্ছিলেন ঠাণ্ডা মাথায়। শটের সংখ্যা কমিয়ে টিকে থাকার দিকে মন দেন তিনি।
৭৭ বলে মাত্র ৩ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মন্থর ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহও সময় নিয়ে থিতু হয়ে রান বাড়াতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে বড় জুটির পর শেষটাও রাঙানোর আভাস ছিল তার। তবে ১০৩ বলে ৯৩ রানের জুটির পর বিদায় মাহমুদউল্লাহর। ৫২ বলে ৩৩ করা মাহমুদউল্লাহ লুক জঙ্গুইর স্লোয়ার বাউন্সার মারতে গিয়ে পুরো ব্যাটে লাগাতে পারেননি। সহজ ক্যাচ যায় উইকেটের পেছনে।
শুরুতে সময় নিয়ে থিতু হওয়া লিটন ফিফটির পর ছিলেন অনেকটা সাবলীল। বাউন্ডারির উপর জোর না দিয়ে দারুণ বিচক্ষণভাবে সিঙ্গেল-ডাবলসের উপর ভর দিয়ে এগিয়ে নেন ইনিংস। রান-বলের ব্যবধানও ক্রমশ কমে আসে। প্রথম ফিফটি করতে ৭৭ বল লাগালেও পরের ফিফটি আনেন মাত্র ৩২ বলে।
১০০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারে চতুর্থ বারের মতো তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন এই ডানহাতি ওপেনার।
সেঞ্চুরির পর মেরে খেলে রান বাড়ানোর দায় ছিল তার উপরই বেশি। সেই চেষ্টাতে গিয়েই হয়ে যায় গড়বড়। রিচার্ড এনগারাভাকে পুলে উড়াতে গিয়ে ভাল টাইমিং হয়নি, ক্যাচ যায় ফাইন লেগে। ১১৪ বলে ১০২ রানে থামেন লিটন।
পরে আফিফ হোসেন দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পথ হারায়নি। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে আরও ৫৮ রান যোগ করেন তিনি। স্লগ ওভারে নেমে মিরাজ ছিলেন কিছুটা মন্থর। আফিফ অবশ্য সবটা পুষিয়ে দেন। তবু শেষ ৬০ বলে ৭৭ রানের বেশি আসেনি।
৪৯তম ওভারে মিরাজ ২৫ বলে ২৬ করে ক্যাচ দেওয়ার পরের বলেই স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন আফিফ। ৩৫ বলে দলের চাহিদা মেটানো ৪৫ এসেছে তার ব্যাটে। তাতে দল পেয়েছে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ ( তামিম ০, লিটন ১০২, সাকিব ১৯, মিঠুন ১৯, মোসাদ্দেক ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, আফিফ ৪৫ , মিরাজ ২৬, সাইফুদ্দিন ৮* , তাসকিন ১, শরিফুল ০* ; মুজারাবানি ২/৪৭ , চাতারা ১/৪৯, এনগারাভা ২/৬১, জঙ্গুই ৩/৫১ , বার্ল ০/৩১, মাধভেরে ০/৩৭ )