নিজস্ব প্রতিনিধি, লামা »
লামা উপজেলায় সম্প্রতি বন্যায় ভেঙ্গে গেছে শতশত বসত ঘর। তার মধ্যে লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শীলের ৪০ বছরের বসত ঘরটিও ভেঙ্গে গেছে। লামা পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে নুনারবিল খালের দক্ষিণ পাড়ে ৫৯ শতাংশ জমির উপর বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শীলের বসত ঘর। এর মধ্যে খালের ভাঙনে বিলিন হয়ে যায় অর্ধেকেরও বেশি ভূমি। প্রতি বর্ষায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসত ভিটার ভূমি একটু একটু করে গিলে খাচ্ছে খালে। একটি গাইড ওয়াল নির্মাণ হলে খালের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে পরিবারটি। জানাগেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান নুনার ঝিরি খাল খনন করার পর একই বছরের বর্ষায় ঝিরির এ ভাঙন শুরু হয়। গত দুই বছরে এ ঝিরির দুই পাড়ের ৫০টির অধিক বসত ঘর ভেঙে গেছে। লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের হাসপাতাল পাড়ার অংশের মাতামূহুরী নদী থেকে নুনার ঝিরির তিন কিলোমিটার খাল খনন করা হয়। খাল খনন শেষে একই অর্থ বছরের বর্ষায় ঝিরিটির দুই পাড় ভাঙতে শুরু করে ।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানান, ঝিরি খননের ফলে ২০২০সাল থেকে ভাঙন দেখা দেয়। প্রবল বর্ষণের ফলে নুনারবিল মার্মা পাড়া থেকে শুরু করে মধূঝিড়ি পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ঝিরিতে ভেঙ্গে গেছে ,আরো শতাধিক ঘরবারি বিলীন হবার পথে।
ভাঙন রোধে সরকারিভাবে ছোট নুনারবিল ব্রিজ থেকে (ব্রিজের দক্ষিণ পাড়) সহ কয়েকটি আরসিসি ওয়াল নির্মাণ করে দেওয়া হলে ঝিরি পাড়ের বসতবাড়িসহ পাড়ার আরো বসতবাড়ি গুলো রক্ষা পাবে। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শিলের সন্তান এস কে খগেস চন্দ্র প্রতি খোকন জানান,২০১৭ সালে তার পিতা পরলোকগমন করেন। শহরের উপকণ্ঠে সামান্য ভূমিতে বসত ভিটার সাথে নির্মিত কয়েকটি দোকান ঘর ভাড়ার অর্থ ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়ে জীবন চলে তাদের পরিবারটির। এই জমিটুকু ছাড়া আর কোন সম্পদ করতে পারেনি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত তাঁর পিতা। লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাইফুদ্দিন বলেন,গত বছর থেকে ঝিরির ভাঙনের কবলে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শীলের বাড়িটি। গত বৃহস্পতিবারের বন্যায় বাড়িটির অর্ধেক ঝিরির ধ্বসে ভেঙে যায়। ভাঙন রোধ করা না হলে বাড়িটি সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড গত দুই বছর আগে ঝিরি খননের পর থেকে এ ভাঙন দেখা দেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মজনুর রহমান জানিয়েছেন, সম্প্রতি বন্যায় উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্জুন শীলের বাড়িটিসহ প্রায় চারশ বসতঘর নদী-খাল ও পাহাড় ধ্বসে ভেঙে গেছে।
এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তালিকা তৈরীর কাজ এখনো চলছে। এ ব্যাপারে লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত অর্জুন শীলের বসতবাড়িসহ পৌরসভার প্রায় একশতেরর অধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাটসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই নুনারঝিরির দুইপাড়া ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যাবস্থা করা খুবই দরকার হয়ে পড়েছে।