সুপ্রভাত ডেস্ক »
‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দানে আল্লাহর কাছে পাপ মোচনের দোয়া, জীবন আর ভবিষ্যতের শান্তি কামনার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের দুর্দশা কাটাতে দুহাত তুলে কাঁদলেন লাখো মুসল্লি।
শনিবার আরাফাতের ময়দানে সমবেত হজযাত্রীদের উদ্দেশে খুতবায় ফিলিস্তিনের দুর্দশার চিত্র এবং তাদের ভূখণ্ড রক্ষায় প্রার্থনা জানানো হয়।
আরাফার নামিরা মসজিদ থেকে শেইখ মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকলি হজের খুতবা পাঠ করেন। বিশ্বের২০টিভাষায় খুতবার অনুবাদ প্রকাশ করা হয় সৌদি আরবের মানারাত আল হারামাইন ওয়েবসাইটে। খবর বিডিনিউজের।
খুতবায় বলা হয়, “আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য দোয়া করুন। দুঃখ-দুর্দশায় তারা নিপতিত। শত্রুদের আঘাতে তাদের রক্ত ঝরছে। তাদের ঘরবাড়ি ও ভূখণ্ড শত্রুদের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধ-পথ্য, খাবার পানি ও বস্ত্র থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।…আমাদের দোয়া পাওয়ার ব্যাপারে তারা বেশি হকদার।
“হে আল্লাহ, মুসলিমদের ভূখণ্ডকে নিরাপদে রাখুন। অভাব থেকে তাদের মুক্ত করুন। তাদের সকল বিষয়ে দায়িত্বগ্রহণ করুন। মুমিনদের তাদের দেশে নিরাপদ রাখুন। তাদের রিজিক ও সমস্ত বিষয়গুলোর দায়িত্বগ্রহণ করুন।”
এর আগে শনিবার ফজরের পর মুসলমানরা তালবিয়া (লাব্বাইক) পড়তে পড়তে মিনা থেকে আরাফাতের দিকে রওনা হন।
হজের আনুষ্ঠানিকতা অনুযায়ী, জোহরের আগেই আরাফাতের ময়দানে গিয়ে উপস্থিত হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করতে হয়। সেখানে সমবেত হয়ে প্রার্থনা ও খুৎবা শোনাকেই হজ ধরা হয়।
সৌদি আরবে গত শুক্রবার থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী, ১৫ জুন শনিবার আরাফাতের ময়দানে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা চলছে। পরদিন কোরবানির মধ্য দিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন হবে।
এবার বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ হজ করতে সৌদি আরব গেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে এবার ২০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম আশা করা হচ্ছে।
এদিন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা আরফাতের ময়দানে হাজির হয়ে নিজেদের পাপ মোচনে আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে অশ্রু ঝরান। শয়তানের প্ররোচনা থেকে দূরে থাকতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন।
খুতবায় আরাফাতের ময়দানের মহাত্ম তুলে ধরে বলা হয়, “নিশ্চয়ই আপনারা আরাফায় এমন এক সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছেন, যার জন্য ফেরেশতারা আপনাদের নিয়ে আল্লাহর কাছে গর্ব করেন। একটি মহিমান্বিত স্থান ও বরকতময় সময়ে আপনারা একত্র হয়েছেন। এখানে ভালো কাজের প্রতিদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পাপ কাজগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং মর্যাদা বাড়ানো হয়।
“কাজেই রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নাহ অনুসরণ করে আল্লাহর কাছে নিজেদেরকে সোপর্দ করুন। সেই নবীর অনুসরণ করুন, যিনি এ সম্মানজনক স্থানে সাহাবীদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। আরাফাতের সময়টুকু অধিক পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ, আল্লাহর জিকির ও তার কাছে চাওয়ার মাধ্যমে অতিবাহিত করেছেন। সুতরাং আপনারা রাসুলকে (সা.) অনুসরণ করুন।
“নিজেদের জন্য, নিজেদের পিতামাতা এবং যাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তাদের সবার জন্য দোয়া করুন। কারণ কারও অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতারা বলেন আমিন, তোমার জন্যও একই পুরস্কার।”
খুতবায় হাজীদের উদ্দেশে বলা হয়, “হে আল্লাহ তাদের হজকে কবুল করুন। তাদের কাজগুলোকে সহজ করে দিন। কল্যাণ অর্জনের মধ্য দিয়ে গুনামুক্ত হয়ে কবুলকৃত তওবার সৌভাগ্য লাভ করে যাবতীয় প্রয়োজন মিটিয়ে যেন তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, সেই তৌফিক দিন।
“সকল মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা করুন। সকল অনিষ্ট থেকে তাদের রক্ষা করুন। তাদের দ্বীন ও নিরাপত্তাকে তাদের রক্ত ও সম্পদকে, তাদের বিবেক বুদ্ধি ও মান সম্মানকে হেফাজত করুন। তাদের জন্য কল্যাণের ফয়সালা করুন। যাবতীয় অনিষ্টতা ও মন্দ বিষয় থেকে দূরে রাখুন। তাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন।”
“আল্লাহ মানুষের জীবনকে রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। একইভাবে সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে কোরআনে বলেছেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা একে অপরের সম্পদ গ্রাস করো না। তবে পারস্পরিক সম্মতিতে যে ব্যবসা করা হয়, তা বৈধ।”
সৌদি আরবে গত শুক্রবার থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী, ১৫ জুন শনিবার আরাফাতের ময়দানে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা চলছে। পরদিন কোরবানির মধ্য দিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন হবে।
এবার বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ হজ করতে সৌদি আরব গেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে এবার ২০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম আশা করা হচ্ছে।
এদিন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা আরফাতের ময়দানে হাজির হয়ে নিজেদের পাপ মোচনে আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে অশ্রু ঝরান। শয়তানের প্ররোচনা থেকে দূরে থাকতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন।
খুতবায় আরাফাতের ময়দানের মহাত্ম তুলে ধরে বলা হয়, “নিশ্চয়ই আপনারা আরাফায় এমন এক সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছেন, যার জন্য ফেরেশতারা আপনাদের নিয়ে আল্লাহর কাছে গর্ব করেন। একটি মহিমান্বিত স্থান ও বরকতময় সময়ে আপনারা একত্র হয়েছেন। এখানে ভালো কাজের প্রতিদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পাপ কাজগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং মর্যাদা বাড়ানো হয়।
“কাজেই রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নাহ অনুসরণ করে আল্লাহর কাছে নিজেদেরকে সোপর্দ করুন। সেই নবীর অনুসরণ করুন, যিনি এ সম্মানজনক স্থানে সাহাবীদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। আরাফাতের সময়টুকু অধিক পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ, আল্লাহর জিকির ও তার কাছে চাওয়ার মাধ্যমে অতিবাহিত করেছেন। সুতরাং আপনারা রাসুলকে (সা.) অনুসরণ করুন।
“নিজেদের জন্য, নিজেদের পিতামাতা এবং যাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তাদের সবার জন্য দোয়া করুন। কারণ কারও অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতারা বলেন আমিন, তোমার জন্যও একই পুরস্কার।”
খুতবায় হাজীদের উদ্দেশে বলা হয়, “হে আল্লাহ তাদের হজকে কবুল করুন। তাদের কাজগুলোকে সহজ করে দিন। কল্যাণ অর্জনের মধ্য দিয়ে গুনামুক্ত হয়ে কবুলকৃত তওবার সৌভাগ্য লাভ করে যাবতীয় প্রয়োজন মিটিয়ে যেন তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, সেই তৌফিক দিন।
“সকল মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা করুন। সকল অনিষ্ট থেকে তাদের রক্ষা করুন। তাদের দ্বীন ও নিরাপত্তাকে তাদের রক্ত ও সম্পদকে, তাদের বিবেক বুদ্ধি ও মান সম্মানকে হেফাজত করুন। তাদের জন্য কল্যাণের ফয়সালা করুন। যাবতীয় অনিষ্টতা ও মন্দ বিষয় থেকে দূরে রাখুন। তাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন।”
আরাফাতের ময়দানে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করে হজযাত্রীরা মুজদালিফায় যান; সেখানে এক আজানে আলাদা ইকামতে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন।
মুজদালিফায় সারা রাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের পর ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্য ওঠার কিছু আগে মিনার উদ্দেশে রওনা দেবেন হাজিরা।
এর আগে তারা শয়তানকে মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ (রোববার) সকালে মিনায় এসে বড় জামরাতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। কঙ্কর নিক্ষেপের স্থানগুলোতে দেওয়া দিক-নির্দেশনা মনোযোগ সহকারে শুনে তা সম্পন্ন করতে হবে জোহরের মধ্যে।
বড় জামরাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করে মিনায় কোরবানির পশু জবাই করতে হয়।
কোরবানির পরপরই মাথা মুণ্ডন সেরে ফেলতে হয়। এর মাধ্যমে ইহরামের কাপড় পরিবর্তনসহ সব সাধারণ কাজ করা গেলেও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
হজের সর্বশেষ রোকন কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ, যা ১১ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগেই সম্পন্ন করতে হবে। সূর্য ডোবার আগে সেটি করতে না পারলে দম বা কোরবানি কাফ্ফারা আদায় করতে হবে। ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে ধারাবাহিকভাবে ছোট, মধ্যম ও বড় জামরাতে ৭টি করে ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে প্রতিদিন।
তবে যদি কেউ কঙ্কর নিক্ষেপের আগে কিংবা পরে কাবা শরিফ গিয়ে তাওয়াফ করেন, তবে তাকে তাওয়াফের পর আবার মিনায় চলে আসতে হবে এবং রাতে মিনায় অবস্থান করতে হবে।
১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় রাতযাপন করতে হয়। কেউ মিনা ত্যাগ করতে চাইলে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগেই চলে যেতে হবে।
এ সময়ের মধ্যে মিনা ত্যাগ করতে না পারলে ১৩ জিলহজ মিনায় অবস্থান করতে হবে। সেদিন সাতটি করে আরও ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে।
দেশে রওয়ানা হওয়ার আগে তাওয়াফ করতে হয়, যাকে বিদায়ী তাওয়াফ বলে। তবে জিলহজ মাসের ১২ তারিখের পর যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে হিসেবে আদায় হয়ে যায়।