নিজস্ব প্রতিবেদক »
বাজারে প্রায় সব ভোগ্য পণ্যের দাম চড়া। প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ছে। লাগামহীন চিনি ও তেলের দাম। সরকার চিনির দাম বেঁধে দিলেও বাজারে কোন প্রভাব নেই।
সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। সেই সাথে বেড়েছে ডিম, কাঁচামরিচ, আলু, পটল, শসাসহ বেশিরভাগ সবজির দামও।
বৃহস্পতিবার বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা। আগের সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। আর এক মাসে কেজিতে মুরগির দাম বেড়েছে ৪৫-৫০ টাকা।
ব্রয়লারের মুরগির চেয়ে বেশি বেড়েছে সোনালিকা মুরগি বা পাকিস্তানী ককের দাম। গত সপ্তাহে ২৯০ টাকায় বিক্রি হওয়ার মুরগিগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩১০ টাকা দরে।
মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও। খুচরা বাজারে এক জোড়া ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকায়। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
কাজীর দেউড়ি বাজারে ব্যবসায়ী জমির উদ্দীন সুপ্রভাতকে বলেন, লকডাউন খুলে দেওয়ার পর থেকে মুরগির দাম বাড়তি। মাস খানেক আগেও মুরগি ১২০ টাকা এখন ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। এখন দামও বাড়ছেই, কমবে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, এখন অফিস-আদালত, কল-কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে মুরগির চাহিদাও বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ছে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় মুরগির চাহিদা বেড়েছে। সেই তুলনায় মুরগি বাজারে নেই। তাই দাম বাড়ছে।
মুরগি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আগে যারা খামার করতো করোনার কারণে তারা খামারে মুরগি তুলেনি। করোনার ভয়ে অনেকে মুরগি উৎপাদন করেনি। তাই চাহিদার তুলনায় মুরগি আমদানি কমেছে।
বাজারে চিনি কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে দেখা য়ায়, প্রতি কেজি খোলা সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। প্যাকেটজাত সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা।
গত ৯ সেপ্টেম্বর চিনির মূল্য বেঁধে দেয় সরকার। সরকার নির্ধরিত দাম প্রতি কেজি খোলা চিনি ৭৪ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ৭৫ টাকা। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, এই দামে চিনি বিক্রি করা সম্ভব নয়। পাইকারি দোকন থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়।
অন্যদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর সরকার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রতি লিটার ১২৯ টাকা। কিন্তু খোল বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল(লুজ) বিক্রি হচ্ছে ১৩৩ থেকে ১৩৫ এবং সয়বিন তেল (বোতল) বিক্রি হচ্চে ১৫০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে। যা এর আগের সপ্তাহেও ছিল ৯০-১০০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে ৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া ঝিঙা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। শীতকালীন আগাম সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। গাজর ও টমেটোর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
একইভাবে ৫৫ টাকার করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, ৪০ টাকার পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে, ৩৫-৪০টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেড়সের দাম দ্বিগুণ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়। রসুনের দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। প্রকারভেদে ৯০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা বড় দানার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। বিদেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়।