সুপ্রভাত ডেস্ক »
নানা জাতের ফুল ও ফলের গাছ, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির চারা বিক্রির জন্য আনা হয়েছে স্টলগুলোতে। বনজ, ফলদ, ঔষধি গাছ কিংবা ঘর সাজানোর অর্কিড, বনসাই সব ধরনের গাছ আছে এই মেলায়। খবর বাংলানিউজের।
ক্রেতারা আসছেন দেশি-বিদেশি ফুলের নানা জাত খুঁজে নিতে। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সবাই ঘুরতে আসছেন মেলায়।
‘বৃক্ষপ্রাণে প্রকৃতি-প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’ শিরোনামে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা। মেলায় গাছ কিনতে এসে শিক্ষার্থী নুসরাত সুলতানা মিম বলেন, করোনার কারণে মেলা হয়নি। এখন প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মেলা ঘুরে চেনা অচেনা নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যাবে। এখানে এলেই মন ভালো হয়ে যাবে। পরিচিত হওয়া যাবে উদ্ভিদ রাজ্যের সঙ্গে।
তিনি আরও বলেন, ঘর সাজানোর জন্য অনেকেরই পছন্দ টব কিংবা বনসাঁই। ফ্ল্যাট বাড়ির ছোট জায়গায় সবুজের ছোঁয়া আনতে গাছ লাগানো যায়। কোনো কোনো গাছের রয়েছে ওষুধি গুণ আবার কোনো গাছ বয়ে আনে সৌভাগ্য আর প্রাচুর্য। টবে লাগানো যায় পিস লিলি, গোলাপ, অর্কিড, ক্যাকটাস, তুলসী ইত্যাদি।
চট্টগ্রাম বন বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর সিআরবি শিরিষ তলা মাঠে এই বৃক্ষমেলা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃক্ষমেলা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহাম্মদ, রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হক চৌধুরী বাবুল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী। মেলা উদ্বোধনের আগে বর্ণাঢ্য র্যালি সিআরবি থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আরেক দর্শনার্থী তৌফিক ইফতেখার বলেন, মেলায় দেখা গেছে ডুরিয়ান, অলিভ, কাউ, পিচ, কিউই ফল, অ্যাভোকেডো, আলমন্ডা, ড্রাসিনা, চেরী ফল, পার্সিমন ফল, ড্রাগন, ট্যাং ফল, অ্যাপ্রিকট ফল, আদা জামির, স্ট্রবেরি পেয়ারা, বিলাতি গাব, রাম্বুটান, জয়ফল, সাদা নাশপতি, রাবাবা, মাল বেরি, লোকাট ফল, এবিউ ফল কালোজাম, সাতকরা, সফেদা, কদবেল, আতা, কুল, বড়ই, ডালিম, করমচা, বেল, জাম্বুরা, কাঁঠাল, লাল কাঁঠাল, চাম কাঠাল, ডুমুর, কাজু বাদাম, জবা ফুল, ম্যান্ডেভিলা, ফুল, হাসনাহেনা, পলাশ, কনকচাপা, বাসন্তি, মালতী, নয়নতারা, আঁশফল, ঘৃতকুমারী, লটকনসহ নাম জানা-অজানা হাজারো ফল ও ফলের দেশি-বিদেশি গাছ।
বৃক্ষমেলায় প্রায় অর্ধশত নার্সারি এবং বিভিন্ন সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশ নিয়েছে। মেলায় লাখ টাকা দামের বনসাঁই থেকে শুরু করে ১০-২০ টাকা দামের বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ এবং ঔষধি বৃক্ষের চারা পাওয়া যাচ্ছে। মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই বৃক্ষপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ১৭ আগস্ট পর্যন্ত এই বৃক্ষমেলা চলবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।