সুপ্রভাত ডেস্ক »
লাখো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে রাঙামাটির রাজবন বিহারে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজবন বিহারের ৪৮তম কঠিন চীবর দানোৎসবে বনভান্তের স্মৃতির উদ্দেশ্যে চীবর দান করেন বিহারের উপাসক-উপাসিকা, পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। এ সময় ধর্মদেশনায় উপস্থিত ছিলেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালঙ্কার মহাথের।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, সাবেক উপমন্ত্রী মণিস্বপন দেওয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালঙ্কার মহাথের বলেন, ‘পৃথিবী থেকে দুঃখ, গ্লানিবোধ মুছে ফেলার মাধ্যমে মানব হিতার্থে জীবনযাপন করতে হবে। একে অন্যকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে। জীবকে ভালোবাসতে হবে। তবেই ভগবান বুদ্ধের দর্শন লাভ সহজ হবে।’ এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে বেইনঘর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব।
পাহাড়ে মাসব্যাপী চলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দানোৎসব। তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমা থেকে মাসব্যাপী বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত হয় এই দানোৎসব।
উল্লেখ্য, গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাউপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা এবং সুতা রঙ করে কাপড় বুনে তা সেলাই করে চীবর (ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) দান করে এই কঠিন চীবরদানের সূচনা করেন প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে। এই পদ্ধতিতে দান করলে কায়িক, বাচনিক মানসিকভাবে অধিক পরিশ্রম হয় এবং অধিকতর পুণ্যলাভ হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে) রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার তিনটিলা বন বিহারে ১৯৭৪ সালে কঠিন চীবর দানোৎসবের পুনঃপ্রবর্তন করেন।