নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ চার রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ক্যাম্প-৫ এর একটি ঘরে সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনের বাড়ি থেকে ৪ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৪টি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটারগান, ৩০টি চায়না রাইফেলের গুলি, ২৭টি পিস্তলের গুলি, ৫টি শর্টগানের কার্তুজ, ৩টি খালি ম্যাগাজিন, ৪টি ওয়াকিটকি, ৫টি মোবাইল সেট ও ১টি চাকু উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২ ইস্টের বাসিন্দা মোহাম্মদ জোবায়ের (২০), ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নুর মোহাম্মদ (২৫), ৫ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোসা বিবি (১৬) ও একই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত সালেহ আহমদের স্ত্রী জমিলা বেগম (৪৮)।
আটককৃতদের দুপুরে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে ১৪ এপিবিএন কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কক্সবাজারের ডিআইজি (এফডিএমএন) মো. জামিল হাসান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এপিবিএন এর কাছে খবর আসে ক্যাম্প-৭ এ সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ সংঘটিত করার পরিকল্পনা করছে। খবর পাওয়ার পর ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে টহল জোরদার করা হয়। ঘটনাস্থলে এপিবিএন সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়ে। সরকারি সম্পদ রক্ষা ও আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। একই ঘটনার সূত্র ধরে সন্ত্রাসীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে রাতভর গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে শুক্রবার সকাল ৭টায় সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিন দলবলসহ ক্যাম্প-৫ এর একটি ঘরে অবস্থানের খবরে অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।
ক্যাম্পে তল্লাশি চৌকি থাকার পরেও কিভাবে অস্ত্র, মাদক ক্যাম্পে প্রবেশ করে সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি বাস্তুুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে। ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় কৌশলে রোহিঙ্গারা কাটাতারের বেড়ােেকটে বাইরে চলে যায়। অন্যদিকে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার বিতরণ কেন্দ্র ক্যাম্পের বাইরে হওয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা আসা যাওয়া করে। এর ফাঁকে বের হওয়ার সুযোগ পায়। তবে তল্লাশি চৌকিতে বিভিন্ন সময় মাদক,অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
ব্রিফিংয়ে ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক সৈয়দ হারুন অর রশীদ, ৮ এপিবিএন অধিনায়ক আমির জাফরসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।