কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্প পরিদর্শন কালে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমানোর বিষয়টি তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে জানাবেন। খাদ্য সহায়তা কমালে লোকজন আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়বে এবং অনেকে মারাও যাবে। আমরা সেটা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না যে, বিশ্ববাসী রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবে।
তাই আমি জোরালো ভাবে এই বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবো যে- এখানে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা দরকার। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণার কারণে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা বাজেট সাড়ে ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা আগামী এপ্রিলের এক তারিখ থেকে কার্যকর করার কথা রয়েছে। সে সময় তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একমাত্র সমাধান তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন। তবে এই মুহূর্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন উদ্যোগ কতটা সম্ভব, তা নিয়েও নিজের উদ্বেগের কথা জানান তিনি।
নিজের দেশ মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। গত আট বছরে বহুবার তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। কিন্তু সম্ভব হয়নি। একদিকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরা অনিশ্চিত, অন্যদিকে তাদের খাবারের জন্য সহায়তা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এতদিন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে।
বাংলাদেশের জন্য সংবাদটি উদ্বেগের। কারণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জনসংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। আট বছর আগে যতজন রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল এখন তা অন্তত ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য সাহায্যের পরিমাণ কমে গেলে নতুন আরেক বিড়ম্বনা সৃষ্টি হবে।
বরং আমরা আশা করব জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তরিকভাবে প্রচেষ্ঠা চালাবেন রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত নেওয়ার। আগামী বছরের ঈদ যেন তারা মিয়ানমারে তাদের নিজ বাস্তুভিটায় উদযাপন করতে পারে।