বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পাকশী, লালমনিরহাট ও সৈয়দপুরে হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৪টি ও পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে ৬টি। এসব হাসপাতালে ২৭০টি শয্যা থাকলেও অধিকাংশ সময় তা রোগীশূন্য অবস্থায় থাকে। শয্যাসংখ্যা ২৭০ হলেও অবকাঠামোর দিক থেকে এসব হাসপাতাল আরও বিস্তৃত করার সুযোগ রয়েছে। দেশে প্রয়োজনের তুলনায় হাসপাতালের সংখ্যা কম হলেও এবং সেখানে রোগী ধারণের ক্ষমতা না থাকলেও একই সময়ে রেলের হাসপাতালগুলোতে কোনো রোগী থাকে না। এ কারণে অনেক বছর ধরে দাবি করা হচ্ছিল সেখানে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।
এবার সে দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, রেলওয়ের হাসপাতালগুলো এবার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। স্থানীয় সিভিল সার্জনদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি এই হাসপাতালগুলো পরিচালনা করবে। এসব হাসপাতালে এখন থেকে রেলকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলওয়ে সমঝোতা চুক্তি করে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল ও ওষুধ–যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে হাসপাতালগুলোতে আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। শুক্রবার চট্টগ্রামে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামে সিআরবি হাসপাতাল পরির্দশনকালে হাসপাতালে কোনো রোগী দেখতে না পেয়ে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালটি ঘুরে দেখলাম। এই ধরনের হাসপাতাল দেশের আরও বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপে শয্যা খালি থাকে না। কিন্তু এই হাসপাতালে (সিআরবি হাসপাতালে) দেখি বেডের অভাব নেই; রোগীর অভাব! এ সময় তিনি হাসপাতাল পরিচালনা ও সেবার মান বাড়াতে চারটি নির্দেশনা দেন। এগুলো হচ্ছে– হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিকিৎসক এই হাসপাতালে সংযুক্তি দিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও খাবার সরবরাহ করবে। এই হাসপাতাল রেলকর্মীদের পাশাপাশি সর্ব সাধারণের চিকিৎসা সেবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এ সময় তিনি বলেন, আমার সাথে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথা হয়েছে। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা চিকিৎসকদের সংযুক্তির মাধ্যমে পদায়ন করে রেলওয়ের হাসপাতাল অবকাঠামোকে বৃহত্তর পরিসরে ব্যবহার করবে সরকার। এ সময় হাসপাতালে সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামকে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এ সিদ্ধান্ত যত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে ততই মঙ্গল হবে। সাধারণ মানুষ যারা দীর্ঘদিন চিকিৎসাসুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন তারাও সুচিকিৎসার সুযোগ পাবেন।