রেলওয়ে কলোনিতে অবৈধ দখলের মহোৎসব

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টাইগারপাসুপাহাড়তলীুকদমতলীুআইসফ্যাক্টরি রোডুজান আলী হাট স্টেশনের রেলওয়ের স্টাফ কোয়ার্টার ও কলোনির বেশির ভাগ বাসায় বসবাস করছেন বহিরাগতরা। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার তাদের দখলে রাখা বাসা অন্যদের ভাড়াও দিচ্ছেন। রেলওয়ে বিষয়টি জানলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বছরের পর বছর।
টাইগারপাস ও পাহাড়তলী রেলওয়ে কলোনিতে চার ক্যাটাগরিতে মোট ৫ হাজার ৩২৯টি বাসা রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য ১৫৩টি, দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য ২৩৭টি, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ২ হাজার ২৫৫টি ও চতুর্থ শ্রেণির জন্য ২ হাজার ৬৮৪টি বাসা রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ বাসাতেই থাকেন না রেলের কর্মকর্তাুকর্মচারীরা।
স্থানীয় এক পত্রিকার বরাতে জানা গেছে, রেলের স্টাফদের প্রতিটি কোয়ার্টারের সামনে আঙিনার খালি জায়গায় অবৈধভাবে সেমিপাকা এবং কাঁচা টিন শেড ঘর নির্মাণ করে অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগও নেওয়া হয়েছে। পাহাড়তলীতে রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজারের দপ্তরের এক কর্মচারীর কোয়ার্টারের সামনে এবং আরএনবির এক ইন্সপেক্টরের কোয়ার্টারের সামনে ১০ থেকে ১৫টির বেশি ঘর করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। আরএনবির ওই ইন্সপেক্টর আরো বহু জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
পুরো সিআরবির আশপাশে আরএনবির সদস্যরা কয়েকশ ভাসমান দোকান বসিয়েছেন। ভাসমান কয়েকটি ফুচকাুচটপটি ও চায়ের দোকাদারের সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রথমে বসার সময় সিআরবি ফাঁড়ির আরএনবির ইন্সপেক্টর, হাবিলদারদের একটি মোটা অংশের টাকা দিতে হয়েছে। এরপর প্রতিদিন সন্ধ্যায় সবাইকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়। তিনজনে মিলে এই টাকা তোলে বলে জানান দোকানদাররা। এখানে দোকান ভেদে টাকার হারও ভিন্ন বলে জানান তারা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূুসম্পত্তি কর্মকর্তা মাহাবুব উল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, নিজের নামে রেলওয়ে থেকে বাসা বরাদ্দ নিয়ে সেই বাসায় না থেকে বাইরের লোকের কাছে ভাড়া দেয়াটা অন্যায়। এরকম কেউ করলে তার বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। তিনি বলেন, রেলওয়েতে বেশির ভাগ স্টাফ নিজের জন্য বাসা বরাদ্দ নিয়ে নিজে থাকেন না। সেটা বাইরের লোকের কাছে ভাড়া দেন। বাইরে যেগুলো অবৈধ ভাবে বসবাস করে সেগুলো উচ্ছেদ করা যতটা সহজ; কোয়ার্টারের ভেতরের খোলা জায়গায় যেসব বাসা তৈরি করে ভাড়া দেয়া হয়েছেুসেগুলো উচ্ছেদ করা একটু বিব্রতকর।
রেলের সে কর্মকর্তা বলেন, রেলের জায়গায় তো বাইরের কেউ অবৈধভাবে থাকতে পারে না। কিন্তু থাকছে। বছরের পর বছর এমন অন্যায় চললেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ ধরনের লেখালিখি অতীতেও হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে না।