নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামে প্রায় দুই হাজার ফ্ল্যাটের আবাসন প্রকল্প নিয়ে শুরু হচ্ছে ‘রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার-২০২৩’। এরমধ্যে এক হাজার দুশ’টি প্রস্তুত ফ্ল্যাট ও প্রায় ৮০০টি নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট বিক্রির পশরা সাজাবে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান। মেলায় ছয়টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পাঁচটি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালসের প্রতিষ্ঠানও অংশগ্রহণ করছে। এ মেলা প্রধান অতিথি হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করবেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
গতকাল বুধবার রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘স্বপ্নীল আবাসন সবুজ দেশ, লাল সবুজের বাংলাদেশ- শিরোনামে হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রামের মোহনা হলে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার-২০২৩। যা চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। রিহ্যাব ফেয়ার উদ্বোধন করবেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ এবং চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এবারের মেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে চট্টগ্রামে ১৪টি ফেয়ার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। আমাদের আশা বিগত আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবারও একটি সফল ফেয়ার আমরা উপহার দিতে পারব। আমাদের সদস্য এবং ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এই ফেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রিহ্যাব ফেয়ার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মনের মত ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে ক্রেতাদের সাহায্য করবে। এবারের ফেয়ারে গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ২টি প্রতিষ্ঠান, কো স্পন্সর হিসেবে ১৭টি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৬টি, বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস প্রতিষ্ঠান ৫টিসহ মোট ৪৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।’
মেলায় অফার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এবারের মেলায় আসা দর্শনার্থীর জন্য প্রতিদিন র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে আকর্ষণীয় পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য দুই ধরনের টিকেট থাকবে। এরমধ্যে ৫০ টাকায় সিঙ্গেল টিকেট ও ১০০ টাকায় মাল্টিপল টিকেট পাওয়া যাবে। এছাড়া মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের মতো অফার দেবে।’
দেশজুড়ে রিহ্যাবের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে দেশের আবাসন সমস্যা সমাধানে রিহ্যাবের ৯শ’টির অধিক সদস্য ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রিহ্যাবের বিপুল কার্যক্রমে গত কয়েক দশক সহজে আবাসনের মালিকানা সৃষ্টি মানুষের মনে আত্মনির্ভরতা তৈরি করেছে। এছাড়া সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ যেমন বিভিন্ন প্রকার লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সমগ্র নির্মাণ খাতের অবদান প্রায় ১৫%। বাংলাদেশের আবাসন সংশ্লিষ্ট শিল্প শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সাথে ৪০ লাখ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের অন্নের যোগান দিচ্ছে। আবাসন খাত নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করছে, যা প্রকারান্তরে দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।’
চট্টগ্রামের উন্নয়নে রিহ্যাবকে সম্পৃক্ত করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) মাস্টারপ্ল্যানের প্রস্তাবনার একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে। আমরা চট্টগ্রামের উন্নয়নে সিডিএ’র গৃহীত এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমরাও চাই চট্টগ্রামে আবাসন সংকটের সমাধানসহ চট্টগ্রাম স্যাটেলাইট টাউন গড়ে তুলতে। এক্ষেত্রে রিহ্যাবকে সম্পৃক্ত করে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করার দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে মেলার প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প প্রসঙ্গে জানতে কথা হয় রিহ্যাব চট্টগ্রামের সচিব বাবুল বেনজিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবারের মেলায় ৪৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এরমধ্যে ৩৭টি রিহ্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এদের প্রস্তুত করা এক হাজার দুশ’টি ফ্ল্যাট রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৮০০টি নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট ও কর্মাশিয়াল স্পেস আগ্রহী ক্রেতাদের দেখানো হবে।’