সুপ্রভাত ডেস্ক »
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস প্রদান করেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম, সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন।
এর আগে ১২ অক্টোবর এ মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে বিচারক অসুস্থ থাকায় এ রায় পিছিয়ে ২৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত। তবে ওইদিন প্রবীণ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার মৃত্যুবরণ করায় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এজন্য রায়ের দিন পিছিয়ে ১১ নভেম্বর নতুন দিন ধার্য করেন।
এরও আগে, ৩ অক্টোবর জামিনে থাকা আসামিরা আদালতে উপস্থিত হন। তবে জামিনে থাকা পাঁচ আসামির জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা পাঁচ আসামির নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এসময় পাঁচ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেন।
গত ২৯ আগস্ট আত্মপক্ষ সমর্থনে বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ পড়ে শোনান। এ সময় বিচারক তাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা দোষী না নির্দোষ? উত্তরে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযুক্তরা মামলার বাদী, তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়। ওই দুই শিক্ষার্থী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে, সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।
সেখানে যাওয়ার পর তারা কাউকে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও তার বান্ধবী সাফাত ও নাঈমকে ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যেতে দেখেন। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এ সময় অভিযুক্তরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করেন। ধর্ষণের সময় গাড়িচালককে ভিডিও করতে বলেন সাফাত। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।