সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩৬০ রান। জবাবে ৩৫৯ রান করে ফেলেছিল আয়ারল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের জয় মাত্র ১ রানে। ৩৬০ রান করেও জয় মাত্র এক রানে! পাঠক, এটুকু পড়েই বুঝে নিন, গত শুক্রবার রাতে কি এক রূপকথার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ডাবলিনের মালাহাইডে!
৪৯ ওভারে ৩৫০ রান করে ফেলেছে আইরিশরা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন মাত্র ১০ রান। উইকেটে গ্রাহাম হিউম এবং ক্রেইগ ইয়ং। শেষ পর্যন্ত এই ১০ রান আর নিতে পারলেন না তারা। নিলেন ৮ রান। প্রথম বল ছিল ডট, দ্বিতীয় বলে ১ রান। তৃতীয় বলে ক্যাচ উঠলেও ফিল্ডার ধরতে পারেননি। বাউন্ডারি। ৩ বল থেকে ৫। বাকি ৩ বলে ৫ নিতে পারলেই ইতিহাসের সবচেয়ে শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচটিতে জয় হবে আয়ারল্যান্ডের। কিন্তু চতুর্থ বলেই বাউন্ডারি মারা ইয়ং ১ রানের পর দ্বিতীয় রান নিতে গিয়েই আউট হয়ে গেলেন। ৫ম এবং ৬ষ্ঠ বলে নিলেন কেবল ১টি করে রান। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১ রানের দুঃখজনক পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো আইরিশরা। কিন্তু এই পরাজয়েও যেন দুঃখ লেখা থাকবে না আয়ারল্যান্ডের পাশে। কারণ, ওয়ানডেতে বিশ্বের এক নম্বর দলের বিপক্ষে ৩৬০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তারাও চলে গিয়েছিল ৩৫৯ রান পর্যন্ত। এতটুকুই বা কম কিসে! কিন্তু ইতিহাস সব সময়ই জয়ীদের নাম মনে রাখে। পরাজিতদের নয়। সে কারণে বিজয়ী দল নিউজিল্যান্ডে বীরত্বের কথাই বলবে সবাই। তবে, আয়ারল্যান্ডের অসাধারণ এই লড়াইটি সম্ভব হয়েছে কেবল পল স্টার্লিং এবং হ্যারি টেকটরের দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরির সুবাদে। পল স্টার্লিং করেন ১২০ রান। হ্যারি টেকটর আউট হন ১০৮ রান করে। এর আগে প্রথমে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন মার্টিন গাপটিল। তিনি আউট হয়েছিলেন ১১৫ রানে। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। শুরু থেকেই মারমুখি ছিলেন কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল। ফিন অ্যালেনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গড়েন ৭৮ রানের জুটি। ৩৩ রান করে আউট হন ফিন অ্যালেন। ১২৬ বলে ১১৫ রান করে আউট হন মার্টিন গাপটিল। তিন নম্বরে নামা উইল ইয়ং আউট হন মাত্র ৩ রান করে। অধিনায়ক টম ল্যাথাম করেন ৩০ রান। হেনরি নিকোলস ৫৪ বলে করেন ৭৯ রান। গ্লেন ফিলিপস ৩০ বলে করেন ৪৭ রান। মিচেল ব্রেসওয়েল ২১ রানে এবং মিচেল সান্তনার অপরাজিত থাকেন ১৪ রানে। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৩৬০ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই অ্যান্ডি বালবিরনির উইকেট হারালেও বিচলতি হয়নি আয়ারল্যান্ড। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে নিয়ে ৫৫ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেন পল স্টার্লিং। ২০ বলে ২৬ রান করে আউট হন ম্যাকব্রাইন। এরপর পল স্টার্লিং এবং হ্যারি টেকটর মিলে গড়ে তোলেন ১৭৯ রানের বিশাল এক জুটি। ২৪১ রানের মাথায় গিয়ে আউট হন পল স্টার্লিং। ততক্ষণে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের নামের পাশে শোভা পাচ্ছে ১২০ রান। ক্যারিয়ারে এটা তার ১৩তম সেঞ্চুরি।
হ্যারি টেকটর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে আউট হন ১০৮ রান করে। গ্যারেথ ডিলানি ২২, কার্টিস ক্যাম্পার ৫, লোরকান টাকার ১৪, জর্জ ডকরেল ২২ রান করে আয়ারল্যান্ডকে একেবারে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ১টি রানের জন্য ঠেকে যেতে হলো তাদের।