সুপ্রভাত ডেস্ক »
বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা লুট করেছে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। এ সময় তারা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কিছু অস্ত্রও খোয়া গেছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ওই ব্যাংকে হামলা চালায় বলে রুমা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান। ঘটনাস্থল থেকে তিনি বলেন, ‘কারা এই হামলা করেছে এ ব্যাপারে আমরা যাচাই-বাছাই করছি। আর কত টাকা নিয়ে গেছে সে ব্যাপারে ভল্ট পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আসছেন। তারপর ভল্টে ঢুকে সেটা দেখা হবে।’
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে তারা রুমা শাখায় হামলা করেছে। কুকি চিন গোষ্ঠীর (বম পার্টি) সদস্য হতে পারে শোনা যাচ্ছে। তাদের সঠিক পরিচয় এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি। তারা আমাদের শাখা ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। ম্যানেজারের খোঁজ এখনো পাইনি।
‘ভল্ট ভাঙতে পেরেছে কিনা তাও সঠিক জানি না। আমরা কেবলমাত্র শুনলাম, চেষ্টা করছি তথ্য পেতে। পুলিশ ও সেনা সদস্যদের জানানো হচ্ছে।’
এই শাখায় লেনদেন কম হয়, টাকার পরিমাণ তাই অনেক কম থাকে উল্লেখ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘রুমা শাখা বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ার শাখাটিতে সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারা থাকে। ব্যাংকের নিজস্ব অস্ত্রধারী নিরাপত্তা কর্মীও ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হামলায় তারা টিকতে পারেনি।’
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত তাদের প্রায় ১০০ সদস্য এই হামলায় অংশ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈ বং মারমা।
তিনি বলেন, ‘এ সময় ব্যাংকের কর্মীরা নামাজ পড়ছিলেন। ঠিক তখনি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ম্যানেজারকে অপহরণের পাশাপাশি নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু অস্ত্র ও মোবাইল সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছে।’
রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে নেজাম উদ্দিন দায়িত্ব পালন করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনার সময় ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন পাশের একটি মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। তিনি ব্যাংকে গন্ডগোল হচ্ছে শুনে এগিয়ে আসেন। তখন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা করছিলেন। নেজাম উদ্দিন ম্যানেজার বুঝতে পেরে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায়।’ খবর বিডিনিউজ।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন রাত ১১টায় বলেন, ‘ব্যাংকের লুটের বিষয়টা এখনো স্পষ্ট নয়। ওখানে ভাঙচুর হয়েছে, ম্যানেজার অপহৃত হয়েছে। ভল্ট না খুললে বোঝা যাবে না- আসলে কী হয়েছে।’
কত টাকা লুট হয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না। যেটা আমি জানি না তা বলতে পারব না। এ বিষয়টা স্পষ্ট (লুট) না।’