আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে কাদের
সুপ্রভাত ডেস্ক
ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বিএনপি অবস্থান কর্মসূচির নামে রাস্তা বন্ধ করলে তাদের চলার পথই বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার বিকালে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দিবে।
এদিন নয়া পল্টনে সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে শনিবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
বিএনপির এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করবেন, আপনাদের চলার রাস্তা বন্ধ করে দেব। চোখ রাঙাবেন না, দেশি-বিদেশি যারাই চোখ রাঙাবেন তাদের বলে দিচ্ছি, আমাদের শিকড় অনেক গভীরে। চোখ রাঙিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবেন না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘আপনারা হতাশ হবেন না, কারও চোখ রাঙানোর পরোয়া বঙ্গবন্ধু কন্যা করেন না।’
আওয়ামী লীগ সংঘাত চায় না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘কোথায় দাঁড়াবেন, আমরা ছেড়ে দেব। আমরা সঙ্ঘাত চাই না, আমরা শান্তির জন্য এই সমাবেশ করছি। যত লাফালাফি তাফালিং করেন ফখরুল সাহেব, এই তারেক জিয়ার লাফালাফিতে কাজ হবে না। যতই তাফালিং করুন ক্ষমতার ময়ুর সিংহাসন বহুদূরে। রাজনীতির মাঠে আন্দোলনে আওয়ামী লীগকে হারাতে পারবেন না। আন্দোলনে আওয়ামী লীগ চ্যাম্পিয়ন। আগুন নিয়ে আসবেন, আগুনে হাত পুড়িয়ে দেব, ভাঙচুর করতে আসলে হাত ভেঙে দেব।’
তারেক রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ফরমায়েশ দিচ্ছে, এখানে ফখরুল-আমীর খসরুরা লাফালাফি করছে। তাদের কথায় নাকি জাতিসংঘ নির্বাচন পরিচালনা করবে। গণভবন তোমার বাবার? জনগণ শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে গণভবনে বসিয়েছে, জনগণ যতদিন চাইবে ততদিন শেখ হাসিনা গণভবনে থাকবেন। তারেক রহমান কিছুই করতে পারবে না।
‘লন্ডনে বসে তারেক রহমান পুলিশকে ধমক দিচ্ছে, প্রশাসনকে ধমক দিচ্ছে, বলছে ফখরুলদের টাকা অভাব হবে না। তোমার বাবা দম্ভ করে বলেছিল, মানি ইজ নো প্রবলেম। কোথায় গেল তোমার বাবা? তুমি তো এবারও তাই বলছ।’
কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা লুট করে নিয়ে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগ করে, কংগ্রেসের কিছু লোকজন দিয়ে জাতিসংঘের অ্যাম্বাসেডরের কাছে চিঠি পাঠায়- জাতিসংঘের আন্ডারে নির্বাচন করতে হবে।
রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছে, সেই তারেক রহমান এখন নেতা। এই তারেককে ধরবে বাংলাদেশের মানুষ। যতই লন্ডনে থেকে আস্ফালন করছে ততই মানুষ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তারেক রহমান।’
কারা কারা ঘনঘন লন্ডন যান, টাকা তুলে দিচ্ছেন তারেকের হাতে, সেই খবরও আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নমিনেশনের জন্য টাকা নিয়ে যাচ্ছে, পরে সুবিধা নেয়ার জন্য টাকা দিচ্ছে এই বুঝি ক্ষমতায় এসে যাচ্ছে। যারা আমার মাতৃভূমির টাকা লুট করছে, গণতন্ত্রকে গিলে খাচ্ছে, আমার বঙ্গবন্ধুকে অপমান করছে, তাদের হাতে আমার জন্মভূমির ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারি না।’
সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এক দফা খাদে পড়ে গেছে। এই এক দফা কোনোদিন ক্ষমতার স্বাদ পূর্ণ করতে পারবে না।’
সমাবেশ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
এর আগে দুপুর সোয়া ২টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের এ কর্মসূচি শুরু হয় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন।