কোতোয়ালী থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত ক্যারাভান কর্মসূচিতে সুজন
চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় অংকের মেগা প্রকল্পসমূহে অর্থের যোগান দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের চিত্র পাল্টে যাবে, চট্টগ্রাম হবে প্রাচ্যের রাণী। চট্টগ্রামের উন্নয়নে সকল সংস্থা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারলেই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের চট্টগ্রামে রূপ লাভ করবে এ নগরী। তাই সেবা সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই।’
বুধবার চসিকের প্রকৌশল, পরিচ্ছন্ন ও বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টিম নিয়ে নগর সেবায় ক্যারাভান কার্যক্রমের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে কোতোয়ালী মোড় থেকে আশারাফ আলী রোড হয়ে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত যাত্রাকালে বিভিন্ন স্থানে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি-অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা ও যথেচ্ছতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় স্বার্থান্বেষী মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখবো। যখন রাস্তায় নেমেছি কিছুতেই থামবার পাত্র নই। তবে একজন রাজপথের রাজনীতিক হিসেবে গঠনমূলক সমালোচনাকে স্যালুট করি। নগরবাসীকে সাথে নিয়ে একটি মানবিক এবং বাসযোগ্য নগরী গড়ার লড়াইয়ে নেমেছি। হকারদের জন্য টাইমফ্রেম ও নিয়ম-নীতি ঠিক করে দিয়েছি। যাতে হকারও থাকে আর নগরবাসীও নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে। হকার নেতারা এসব মেনে চলবেন বলে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন।
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন, যারা রাস্তা দখল করে নিয়ম-নীতি না মেনে দোকান-পাঠ বসিয়েছেন তাদের কাছ থেকে কোন কেনা-কাটা করবেন না। তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করুন। ক্যারাভান কার্যক্রম পরিচালনার সময় প্রশাসক স্থানীয় জনসাধারণের কাছে সমস্যা ও দুর্ভোগের কথা জানতে চান। এ সময় এলাকাবাসী বিভিন্ন জায়গায় তাদের সমস্যার কথা অবলীলায় প্রশাসকের কাছে তুলে ধরেন। প্রশাসক আশরাফ আলী রোড সংলগ্ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন ব্রিজের কারণে খালের মধ্যে বাঁধ দেয়ায় সাময়িক যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার জন্য এলাকাবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ক্যারাভানে জনতার জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক সময় বৃহৎ স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে হয়। ব্রিজের কাজ শেষ হলে এই দুর্ভোগ আর থাকবে না। তাছাড়া পাথরঘাটাস্থ মিরিন্ডা মেইন রোডে অবস্থিত ড্রেনে সø্যাব ভেঙ্গে যে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তাতে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বিধায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে নতুন সø্যাব স্থাপনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন প্রশাসক। যাত্রাপথে তিনি ব্রিকফিল্ড রোড ও আশরাফ আলী রোডের অকেজো সড়ক বাতি সরিয়ে নিয়ে নতুন সড়ক বাতি লাগানোর জন্য চসিক বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। চলতি পথে প্রশাসক ময়লার স্তূপ, ভাঙ্গাচোড়া রাস্তা ও ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা তাৎক্ষণিক সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন এবং এলাকাবাসীকে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানান।
ক্যারাভান কার্যক্রম পরিচালনার সময় উক্ত এলাকায় বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে শতশত নগরবাসী প্রশাসককে স্বাগত জানান।
এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার বিষয়ে প্রশাসককে অবগত করলে প্রশাসক বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করছেন। কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। প্রশাসক কর্ণফুলী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা দখল করে যানজট সৃষ্টিকারী অলস গাড়ি পাকিং দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এহেন কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এছাড়া স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর আবু মুসা চৌধুরীর মৃত্যুতে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে প্রশাসক দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন।
ক্যারাভান কার্যক্রমে প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোছাইন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, রাজনীতিক পুলক খাস্তগীর, মো. মোরশেদ আলম, মো. সোলায়মান সুমন, মো. সাইফুদ্দীন, দিদারুল আলম, আবুল কালাম আবু, মোজাম্মেল হক, শফিউল আলম, মনিরুল হক মুন্না, নোমান সাঈফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি