নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »
ভোটের হিসাব কিংবা স্থানীয় রাজনীতি, ভাবনার বৈচিত্র্য বা বৈপরীত্য, সব বিবেচনাতেই বরাবরই রাঙামাটিতে আলোচনায় থাকে লংগদু। সহিংসতা কিংবা সম্ভাবনায়ও খুব একটা পিছিয়ে নেই পুনর্বাসিত বাঙালি অধ্যুষিত এই উপজেলা। সঙ্গতকারণেই বাকি সব উপজেলার যাবতীয় ইউনিয়নে অনেকটাই ম্যাড়ম্যাড়ে আর আটপৌড়ে নির্বাচনের পরও শেষ ধাপের নির্বাচনে পুরো জেলাবাসীর মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে এই উপজেলাই। উপজেলার বাঘা বাঘা নেতাদের বহিষ্কার করে মুহূর্তেই বেড়াল বানিয়ে দেয়ার পরও স্বস্তিতে নেই ক্ষমতাসীন দল। একমাত্র এই উপজেলাতেই গত এক সপ্তাহে মাঠে পড়ে আছেন খোদ জেলা সম্পাদক মুসা মাতব্বরও। ইতোমধ্যেই বহিষ্কৃত হয়েছেন ১৭ নেতা, যার মধ্যে রয়েছে উপজেলা সভাপতিও। গুলশাখালি ও মাইনী ইউনিয়ন থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা সরে গেলেও বাকি ইউনিয়নগুলোর স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের। একমাত্র আটারকছড়া ইউনিয়ন ছাড়া বাকি একটি ইউনিয়নেও স্বস্তিতে নেই তাদের প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র আর বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপটে বেশ ‘অস্বস্তিতেই’ আছে তারা।
অন্যদিকে প্রতিবেশী উপজেলা ও আয়তনে দেশের সবচে বড় উপজেলা বাঘাইছড়িতেও স্বস্তি নেই। সেখানে ইতোমধ্যই দুই ইউনিয়নে দুই প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হলেও বাকি পাঁচটিতে লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। এক আমতলীতেই নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে খোদ তার পিতাই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন সহসভাপতিও। এক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিতে পারে ছাত্রদলের এক তরুণ নেতা। খেদারমারাও বিপাকে আছে ক্ষমতাসীন দল, বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে। সেই সাথে আঞ্চলিক দল সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাপট তো আছেই। ইতোমধ্যেই স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ২২ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
সবমিলিয়ে আজকের শেষ দফার নির্বাচনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সাতটি, বাঘাইছড়ির আটটি এবং জুরাছড়ির দুই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জুরাছড়ির চারটি ইউনিয়নের মধ্যে মৈদং ও দুমদুইম্যার নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় তিন উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই নির্বাচনী সামগ্রীও কেন্দ্রে পৌঁছানোর সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
রাঙামাটি জেলা নিবার্চন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগের সাতটি উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নের মত এই শেষ ধাপের ১৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ করেছি।’
তিন উপজেলার মধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নেই এগিয়ে আছে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকার গৃহবিবাদের সুযোগ নিয়ে অন্তত অর্ধেকেরও বেশি ইউনিয়নে বিজয়ী হতে পারেন তারা। তবে সব জল্পনা কল্পনা অবসান ঘটবে আজ সন্ধ্যায়।
এ মুহূর্তের সংবাদ